জ্যোতির্ময় দত্ত, কলকাতাঃ ২০২৫ সালের মধ্যে পেট্রোল ও ডিজেল চালিত গাড়ির ব্যবহার বন্ধ করে ব্যাটারি চালিত বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে কেন্দ্র। লরি ট্রাক ছাড়া সমস্ত ছোট গাড়ি ও মোটরসাইকেল ওই সময়ের মধ্যে বৈদ্যুতিকরণ এর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এজন্য বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পকে জিএসটি ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। বৈদ্যুতিন গাড়ির ওপর জিএসটির হার ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫শতাংশ করা হয়েছে। মূলত পরিবেশ বাঁচাতে কেন্দ্র এই উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়িত করার সময় সীমা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্য। নোট বাতিলের মত বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়েও কেন্দ্র তাড়াহুড়ো করে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তাঁরর অভিযোগ কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গাড়ি শিল্প ও তার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদেরও সমস্যায় ফেলবে। শুধুমাত্র ব্যাটারি চালিত গাড়ির ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার নতুন দিল্লিতে নীতি আয়োগের বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অন্যান্য রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে অমিত বাবু ও যোগ দেবেন । তার আগে বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে একাধিক প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর নির্মলা সীতারামন কে চিঠি দিয়েছেন তিনি। বুধবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নীতি আয়োগ হঠাৎ রাজ্যে র গাড়ি শিল্প সংস্থা গুলোকে ডেকে পাঠিয়ে ২০২৫ সালের মধ্যে কি ভাবে ব্যাটারি চালিত গাড়ির ব্যবহার একশ শতাংশ করা যায় সে সম্পর্কে দু সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছে । তড়িঘড়ি
এই বিষয় নিয়ে নীতি আয়োগ এর বৈঠক ডাকা হয়েছে।রাজ্য গুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ অন্য সব বিষয়কে পাশে সরিয়ে রেখে এমন একটা বিষয় নিয়ে বৈঠক ডাকার কোনো অর্থ হয় না। এরকম সিদ্ধান্ত ধাপে ধাপে নেওয়া প্রয়োজন।’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনের মত উন্নত দেশগুলো যখন দূষণমুক্ত গাড়ি একশ শতাংশ ব্যবহারের জন্য ২০৩০-৪০ সাল পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে তখন এখানে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে তা করার যৌক্তিকতা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।এছাড়াও তাঁর মতে এই মুহূর্তে বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পের উপর অত্যাধিক গুরুত্ব আরোপ করলে তাতে আদতে সকলেরই লোকসান হবে। অমিত বাবু বলেন এদেশে গাড়ি শিল্পে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ১.৭ লক্ষ কোটি টাকা। সাড়ে তিন কোটিরও বেশি মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে যুক্ত। সম্প্রতি দূষণ কমাতে নতুন বিএ স ৬ মানের গাড়ি তৈরির পরিকাঠামো তৈরি করেছে উৎপাদক সংস্থা গুলো। এখন তাদের জোর করে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনে বাধ্য করলে এই তারা মার খাবে।’ পাশাপাশি এ ধরনের গাড়ির যন্ত্রাংশের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ায় এবং ব্যাটারি চালিত গাড়ি চার্জ দেওয়ার পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকায় সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষ সমস্যায় পড়বেন বলে অর্থমন্ত্রীর দাবি। পাশাপাশি তাঁর মতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লার ব্যবহার করতেই হবে ।তাতে দূষণে আদতে কতটা লাগাম টানা যাবে তা নিয়েও অমিত মিত্র প্রশ্ন তোলেন। বৃহস্পতিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে তিনি এই বিষয়গুলো তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অল্প দূষণ ছড়ানো গাড়ি ও একই সঙ্গে পেট্রোল ডিজেল এবং গ্যাস বা বিদ্যুতে চলে এমন গাড়ির ওপর গাড়ির উপর জিএসটি ছাড় এর প্রস্তাব দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের তরফে।