ক্রাইম দেশ

উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসের পরীক্ষার নাম করে রাতভর স্কুলে যৌন হেনস্থা ১৭জন ছাত্রীকে

সারারাত স্কুলে থেকে প্র্যাক্টিক্যালের পরীক্ষার কাজ শেষ করতে হবে ৷ কর্তৃপক্ষের এই নিদান শুনে বাধ্য হয়ে স্কুলে থেকে গিয়েছিল দশম শ্রেণির ১৭ জন ছাত্রী ৷ তার চরম মূল্য চোকাতে হল তাদের ৷ খাবারে মাদক মিশিয়ে নেশাগ্রস্ত করে সারারাত ধরে তাদের উপর চলল অত্যাচার ৷ দুটি স্কুলের মালিকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ  এনেছেন নিগৃহীতা ২ ছাত্রীর বাবা-মা ৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে একটি স্কুলের মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ খোঁজ চলছে অপর স্কুলের মালিকের ৷ ভয়ংকর এই ঘটনা ১৮ নভেম্বর ঘটে উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে ৷ এমনকি অভিযুক্ত শিক্ষক প্রত্যেক ছাত্রীকে ভয় দেখান, যদি ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ খোলে ফল খারাপ হবে। পরদিন সকাল হতেই প্রত্যেক ছাত্রী স্কুল থেকে চলে যায়। কিন্তু ভয়েতে কিছু বলেনি। পরে ঘটনার কথা চেপে না রাখতে পেরে পরিবারের সদস্যদের বলে দেয় সব কথা। যার ভিত্তিতে স্থানীয় বিধায়কের কাছে চায় পরিবারের সদস্যরা। বিধায়কের নির্দেশেই পুলিশে মামলা দায়ের করা হয়। তারপরেই ঘটনার জানাজানি হয়। তবে ৪ ডিসেম্বর গ্রামের প্রধান মুজফফরনগরের এসএসপি অভিষেক যাদবকে বিষয়টি জানালে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে ৷ অভিযোগ খতিয়ে দেখার

জন্য পুলিশ সুপার অর্মিতেজ বিজয়বর্গীয় ও সদর এলাকার সার্কেল অফিসার কৃষাণ কুমার বিষ্ণোইকে দায়িত্ব দেন এসএসপি ৷ শনিবার ঘটনার তদন্তে স্কুল ও গ্রামে যান তদন্তকারী অফিসাররা ৷ নিগৃহীতা দুই ছাত্রীর বাবা-মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে স্কুল দু‘টির মালিক যোগেশ কুমার ও অর্জুন সিং-এর বিরুদ্ধে পক্সো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে ৷ বিষ্ণোই বলেন, “যোগেশ কুমারকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অপর অভিযুক্তের খোঁজ চলছে ৷” বাকি 15 জন ছাত্রীর পরিবার অভিযোগ দায়ের না করায় গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ যে দু‘জন ছাত্রীর বাবা-মা অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁদের দাবি, ল্যাবে প্র্যাক্টিক্যালের কাজের জন্য স্কুলে ডেকে পাঠানো হয়েছিল ছাত্রীদের ৷ তাদের বলা হয় সারারাত স্কুলে থেকে প্র্যাক্টিক্যালের কাজ শেষ করে দিয়ে যেতে হবে ৷ এরপর ছাত্রীদের খাবারে মাদক মিশিয়ে তাদের নেশাগ্রস্ত করা হয় এবং সারারাত ধরে যৌন হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ ৷ নিগৃহীতা সব ছাত্রীই গরিব পরিবারের ৷ অভিযোগকারী দুই পরিবার জানিয়েছে, এ বিষয়ে কাউকে কিছু বললে কঠিন মূল্য চোকাতে হবে বলে তাদের হুমকি দিয়েছিল অভিযুক্তরা ৷ পরে বাকি ছাত্রীরাও তাদের সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা বাড়ির লোকেদের কাছে শেয়ার করে ৷ বিষয়টি গ্রামের প্রধানের নজরে আনা হয় ৷ তিনি তখন পুলিশের দ্বারস্থ হন ৷  মুজফ্ফরনগরের পুলিশ সুপার অভিষেক যাদব জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীরা প্রত্যেকেই দরিদ্র পরিবারের। ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যোগীরাজ্যের মুজফ্ফরনগরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ঘটনা এটি। যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নাগরিক সমাজ।