গঙ্গাসাগর মেলায় সবদিকেই জোর দিতে প্রস্তুত রাজ্য সরকার। পরিবেশ বান্ধব ও করোনা মুক্ত মেলা প্রাঙ্গনই চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী কাল অর্থাৎ মঙ্গলবার গঙ্গাসাগরের মেলা প্রাঙ্গনের প্রস্তুতির খোঁজ নেবেন মুখ্যমন্ত্রী, করবেন প্রশাসনিক বৈঠক। তার আগেই সোমবার নবান্ন সভাঘরে গঙ্গাসাগর নিয়ে বিস্তর বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসন ও মন্ত্রীদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়ার পাশাপাশি রেলের কর্তা ও কপিল মুনির মন্দির কমিটি কর্তৃপক্ষদের সঙ্গেও আলোচনা করেন মমতা। সেখানেই তিনি বলেন, ‘এবার মেলা হবে প্লাস্টিক মুক্ত। এটা বিশ্বের অন্যতম সেরা মেলা। মেলায় যাতে কেউ বিভেদ ছড়াতে না পারে, উস্কানিমূলক বার্তা না দেয়, তার দিকে নজর রাখতে হবে।’ এছাড়াও এদিন নবান্নের সভাঘরের বৈঠকে গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গন পরিস্কার রাখতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ১০ হাজার শৌচালয় থাকছে। মেলায় কোনও দুর্ঘটনা যাতে ঘটলে তা মোকাবিলা করতে থাকবেন বাইক আরোহী সার্জেন্টরা। পাশাপাশি, নজরদারি চালাতে মেলায় থাকছে ১০৫০টি সিসিটিভি। অগ্নিকাণ্ড রুখতে থাকছে ২৫টি ইঞ্জিন। ১০টি অস্থায়ী ফায়ার স্টেশন। গঙ্গাসাগর মেলার জন্য থাকছে অতিরিক্ত ২২৫০ টি সরকারি বাস। গঙ্গাসাগর মেলার জন্য ময়দান প্রাঙ্গনে আরটিপিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক। হিন্দি ও বাংলায় হোর্ডিং থাকবে, সচেতনতা প্রচারের জন্য থাকবে প্রচুর ভলান্টিয়ার্স। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েই দিয়েছেন এবারের গঙ্গাসাগর মেলা হবে পরিবেশ বান্ধব। পরিবেশ বান্ধবের পাশাপাশি এবারের মেলাতে জোর দেওয়া হয়েছে করোনা নিয়ে। যেহেতু করোনা এখন মূল চিন্তার বিষয়, সঙ্গে ওমিক্রনের আতঙ্ক রয়েছে তাই আরটিপিসিআর টেস্টে জোর দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, মেলায় মেডিক্যাল স্ক্রিনিং ক্যাম্প থাকবে ১৩টি। ময়দানে বাসে ওঠার আগে হবে আরটি পিসিআর টেস্ট। তেরোটি আলাদা আলাদা ক্যাম্প থাকছে। মেলার এলাকায় থাকছে ৬০০ শয্যার একটি কোভিড হাসপাতাল। থাকছে ৫টি আইসোলেশন সেন্টার। সকলকে মাস্ক পরতে হবে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মাস্ক বিলি করবে সরকার এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। মানতে হবে শারীরিক দূরত্ববিধি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য এবার ৫১ কিলোমিটার ব্য়ারিকেড দেওয়া হচ্ছে। বসানো হচ্ছে ১০৫০টি সিসিটিভি বসানো হচ্ছে। সঙ্গে থাকছে ২০টি নজরদারি ড্রোন, জিপিএস গাইডেড মনিটারিং, ইন্ট্রিগ্রেটেড কন্ট্রোল রুম থাকছে। জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনলাইনে থাকছে ই-দর্শন। এছাড়াও অনলাইনে অর্ডার করলে দেশের যে কোনও প্রান্তে গঙ্গাসাগরের পবিত্র জল ও প্রসাদ পৌঁছে দেওয়া হবে। তিনি এও জানান, থাকছে পিলগ্রিমেজ ম্যানেজমেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম। এটি ভিড় সামাল দিতে কাজে লাগবে। কেউ হারিয়ে গেলে খুঁজে পাওয়ারও ব্যবস্থা থাকছে। মেলা সম্পর্কে বিস্তারিত থাকবে মোবাইল অ্য়াপে। গঙ্গাসাগর মেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দায়িত্ব বন্টন করে দিলাম, ফিরহাদ হাকিম, অরুপ বিশ্বাস, মন্টুরাম পাখিরা, শুভাশিস চক্রবর্তী, বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা সব দায়িত্বে থাকবে।