তৃণমূল যে শুধুমাত্র আর আঞ্চলিক দল নয়, সেটা অনেক আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। জাতীয় রাজনীতিতে অনেকদিন আগেই তারা বিজেপি-বিরোধী প্রধান মুখ হয়ে উঠেছে। নানা ইস্যুতে মোদি সরকারকে কার্যত তারা কোণঠাসা করার ক্ষেত্রে রীতিমতো সফল। গোয়ার আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ঘাসফুল শিবির প্রার্থী দিয়েছে। শিবসেনা ওই দলের সঙ্গে জোট গঠন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের এই সিদ্ধান্ত কংগ্রেস কার্যত কোণঠাসা। এই পরিস্থিতিতে এবার পরবর্তী লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা ঘোষণা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আগামী লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে থেকে লড়াই করবে তৃণমূল। বুধবার দলের সাংগঠনিক নির্বাচন শেষ হওয়ার পর কর্মীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে এও বলেন, ওই রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা ভোটে অখিলেশ যাদব এবং সমাজবাদি পার্টির হাত শক্ত করতে তিনি উত্তরপ্রদেশ যাবেন। সামিল হবেন প্রচারে। দুটি সিদ্ধান্ত যে নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। রাজনৈতিকমহলও এই ঘোষণাকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, কংগ্রেস বিজেপির হয়ে ভোট করিয়ে দেয়। বিজেপি-বিরোধী সব দলকে এক ছাতার তলায় আনতে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা চালান। চেষ্টা চালিয়েছেন কংগ্রসকেও আনতে। কিন্তু কংগ্রেস সেই আর্জিতে সাড়া দিতে অস্বীকার করে। নিজের গোঁ ধরে বসেছিল। তবে কংগ্রেস তাঁর ডাকে সাড়া না দিলেও ঘাসফুল শিবির তাঁর জন্য বিন্দুমাত্র বিচলিত নয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রদর্শিত পথেই তারা চলবে। সাংগঠনিক নির্বাচনপর্ব শেষ হওয়ার পর দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই সভা থেকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তাঁকে সুর চড়াতে দেখা গেল। পরিষ্কার বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপি বিরোধী জোটে কংগ্রেস সামিল করার তিনি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কংগ্রেস সেই আর্জিতে সাড়া দিতে রাজি হয়নি। কংগ্রেস যদি মনে করে এর ফলে ঘাসফুল দূর্বল হয়ে পড়বে তাহলে তাদের সেই ধারণা ভুল বলে প্রমাণিত হবে। কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে উৎখাত করতে তৃণমূল বদ্ধপরিকর। ৩৪ বছরের বাম শাসনের পতন ঘটাতে সক্ষম হলে কেন্দ্র থেকে বিজেপিকেও হঠাতে সফল হলেন। ঘাসফুল নেত্রীর কথায়, ‘তৃণমূল যদি বাংলা থেকে সিপিএমকে তাড়াতে পারে, তবে কেন্দ্র থেকেও পারবে।’