শিলিগুড়ি, দার্জিলিং-সহ উত্তরবঙ্গে নয়া আতঙ্কের নাম ‘নাইরোবি ফ্লাই’ বা ‘অ্যাসিড ফ্লাই’। বিগত তিন-চার দিনে শিলিগুড়ি শহরে একাধিক মানুষ ‘অ্যাসিড ফ্লাই’-এর আক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর ৷ আফ্রিকাজাত এই পতঙ্গের শরীর থেকে নির্গত একপ্রকার নির্যাস মানুষের শরীরের সংস্পর্শে আসলেই সেখানে ক্ষতের সৃষ্টি হচ্ছে ৷ স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে উত্তরবঙ্গের শহরগুলিতে ৷ যদিও আতঙ্কের কিছু নেই জানিয়ে আশ্বস্ত করছেন চিকিৎসকরা। শিলিগুড়ি পৌরনিগমের আশ্রমপাড়া, গুরুং বস্তি, চম্পাসারি, দেবীডাঙা, মাটিগাড়া, খাপরাইল, দেশবন্ধুপাড়া-সহ একাধিক এলাকার মানুষ ওই পতঙ্গের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়াও নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া এলাকা থেকেও মিলেছে আক্রান্তের খবর। যার জেরে বেড়েছে আতঙ্ক। তবে আতঙ্কিত না-হয়ে সতর্কতাকে অবলম্বন করতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। ‘নাইরোবি ফ্লাই’ বা ‘অ্যাসিড ফ্লাই’ আফ্রিকার একটি পতঙ্গ। কমলা, লাল, কালো রঙের এই পতঙ্গের শরীরে পেডিটিন নামক একপ্রকার অ্যাসিড থাকে ৷ যা মানুষের ত্বকে ক্ষতের সৃষ্টি করে ৷ মূলত বৃষ্টিপ্রবণ এলাকাগুলিতেই এই পতঙ্গের বাস ৷ উত্তরে বিশেষ করে হিমালয়ের পাদদেশে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে সেখানে বসবাস বিষাক্ত এই পতঙ্গের ৷ চলতি বছরে বৃষ্টি অন্যান্যবারের তুলনায় বেশি হওয়ায় ‘অ্যাসিড ফ্লাই’-এর অস্বাভাবিক হারে বংশবৃদ্ধি হয়েছে। পতঙ্গটি সচরাচর কামড়ায় না। তবে মানুষের শরীরে বসার পর পতঙ্গটিকে মারলে তার শরীর থেকে যে পেডিটিন নির্গত হয়, তাতেই ত্বকে ক্ষতের সৃষ্টি করে। আক্রান্তদের কথায় ক্ষতের জায়গায় প্রথমে ব্যাপক জ্বালা করে, পরে শুরু হয় ব্যাথা। যার জেরে জ্বর এবং বমিও হতে পারে আক্রান্তের ৷ এমন উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। চিকিৎসকের সঠিক পরামর্শে আট থেকে দশ দিনের মধ্যে সেরে ওঠা সম্ভব। মশার মতো এই পতঙ্গ প্রতিরোধের সেরকম কোনও উপায় নেই। সতর্কতাই একমাত্র উপায় ৷ চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন জঙ্গল এড়িয়ে চলতে ৷ ফুল শার্ট, প্যান্ট এবং রাতে অবশ্যই মশারির ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।