অগাস্টেই খতম নাইন ইলেভেনের মাস্টারমাইন্ড। আফগানিস্তানের কাবুলে মার্কিন সেনার হাতে খতম আল কায়দা চিফ অয়মান অল-জওয়াহিরি। আফগানিস্তানের কাবুলে মার্কিন সেনার অভিযানে, ড্রোন হামলায় নিকেশ আল কায়দার অন্যতম মাথা এবং ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার হামলার মূল চক্রী। মৃত্যুর সময় জাওয়াহিরির বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। আল কায়দা প্রধানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় বড় সাফল্য আমেরিকার এমনটাই বার্তা দিতে চাইলেন বাইডেন। মার্কিন ড্রোন হামলায় ৯/১১ হামলার মূল পরিকল্পনাকারী আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরি খতম হওয়ার ঘোষণা করার পর মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্য “ন্যায়বিচার হয়েছে এবং জঙ্গিনেতা শেষ”। এক টেলিভিশনে বক্তৃতা দেওয়া সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আফগান রাজধানী কাবুলে জাওয়াহিরিকে লক্ষ্য করেই অভিযান চালানো হয়েছে। এই হামলার জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছিলাম। বাই ডেন আরও বলেন, তিনি আশা করেন জাওয়াহিরির মৃত্যু নয়-এগারোর হামলায় নিহত তিনহাজার নিরাপরাধের পরিবারকে শান্তি দেবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট পরে তার অফিসিয়াল হ্যান্ডেল থেকে টুইট করেন, এই হামলা “আমেরিকান জনগণকে রক্ষা করার আমাদের ক্ষমতা ও সংকল্পকে”।
প্রসঙ্গত আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা আস্তে আস্তে তাবু গুটিয়ে আমেরিকায় ফিরে আসার প্রক্রিয়া শুরু করে। বাইডেন প্রশাসন নিশ্চিত হয়ে যায়, মার্কিন সেনা দেশে ফিরলেই জাওয়াহিরি কাবুলে ঢুকবে। আর কাবুল থেকে সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকে তার গতিবিধির ওপর শুরু হয় নজরদারি। চলতি বছর মার্কিন গোয়েন্দারা (CIA) কাবুলে জাওয়াহিরি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের চিহ্নিত করে। স্ত্রী-পুত্র পরিবারকে নিয়ে নিশ্চিন্তে কাবুলে বসবাস করছিলেন এই শীর্ষ আলকায়দা নেতা। যদিও মার্কিন প্রশাসন সাততাড়াতাড়ি অভিযানে যেতে রাজি ছিল না। আগে তারা নিশ্চিত হতে চেয়েছিল, যাকে জাওয়াহিরি বলে চিহ্নিত করা হয়েছে সে আসল জাওয়াহিরি কি না। পাশাপাশি অভিযানে যাতে সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু না হয়, সেটাও নিশ্চিত করতে চেয়েছিল মার্কিন সেনা। চলতি বছর এপ্রিলে মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে ছিলেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শদাতা জ্যাক সুল্লিভান। ওই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গোপন অভিযানের। ইতোমধ্যে জাওয়াহিরি তার ঠিকানা বদল করেছে কি না, তা জানতে কাবুল গিয়েছিল মার্কিন গোয়েন্দাদের একটি দল। তারা দেখে বাড়ির বারান্দায় (balcony) পায়চারি করছে আলকায়দা নেতা। জাওয়াহিরির হাঁটাচলা দেখে তারা নিশ্চিত হয়ে যায় কাবুল থেকে চলে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই। কাবুল থেকে ফিরে তারা তাদের রিপোর্ট মার্কিন প্রেসিডেন্টকে (US President) জানিয়ে দেয়। প্রেসিডেন্ট পেন্টাগনকে নির্দেশ দেয় প্রস্তুতি নেওয়ার। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রশাসনের পদস্থকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। জাওয়াহিরিকে খতম করতে গেলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কতটা, যা যাচাই করে দেখেন। ১ জুলাই প্রেসিডেন্ট গোপন বৈঠক করেন। বৈঠকে ছিলেন মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা এবং সিআইএ ডিরেক্টর উইলিয়াম বার্নস । সেখানে অভিযানের একটি নীল নকশা দেখানো হয়। তা দেখার পর প্রেসিডেন্ট অভিযানের ব্যাপারে সবুজ সংকেত দেন। অবেশেষে সেই অভিযানে খতম জাওয়াহিরি।