হেলমেটবিহীন বাইক চালককে হাতেনাতে পাকড়াও করে ‘কেস’ দেওয়া এখন অতীত! অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরার সাহায্যে আইন ভঙ্গকারীদের সরাসরি সবক শেখাতে তৎপর লালবাজার। খালি মাথার চালকের ছবি সেই ক্যামেরায় উঠলেই বাইকের নম্বর চলে যাবে ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে। এই অত্যাধুনিক ক্যামেরা লাগানোর জন্য শহরের ১১১টি জায়গায় ইতিমধ্যে চিহ্নিত করেছে ট্রাফিক বিভাগ। এই সব জায়গায় বিনা হেলমেটে বাইক চালানোর প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। বাইক চালকদের নজরের আড়ালে বসেছে এই বিশেষ ক্যামেরা। তাতে রয়েছে ‘উইদাউট হেলমেট টু হুইলার ডিটেকশন সেন্সর’। ক্যামেরায় ওঠা ফুটেজ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে চলে যাবে ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে। সেখান থেকেই জরিমানার চালান চলে যাবে বাইক বা স্কুটারমালিকের মোবাইলে। মাসখানেক আগেই চিহ্নিত স্থানে ক্যামেরা লাগানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। সেগুলি ইতিমধ্যে কাজও করতে শুরু করেছে। পুলিসের দাবি, এর সুফলও মিলছে হাতেনাতে। লালবাজার সূত্রে খবর, আগে এসব জায়গায় সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ‘ম্যানুয়াল’ পদ্ধতিতে জরিমানা করতেন ট্রাফিক পুলিসের কর্মীরা, যা তা ছিল অনেকটাই সময়সাপেক্ষ। এর পাশাপাশি গোটা শহর সিসি ক্যামেরার আওতায় চলে আসায় কন্ট্রোল রুম থেকেও সেই কাজ করতে পারে ট্রাফিক বিভাগ। কীভাবে হয় এই পদ্ধতিতে জরিমানা? কন্ট্রোল রুমে ফুটেজ দেখে প্রথমে হেলমেটবিহীন চালককে চিহ্নিত করা হয়। তারপর বাইক বা স্কুটারের নম্বর প্লেট দেখে কম্পিউটার সার্ভারের সাহায্যে জরিমানা করা যায়। তবে সেই কাজও বেশ সময়সাপেক্ষ। জানা গেছে, ট্রাফিক ক্যামেরায় নতুন ধরনের সফ্টওয়্যার ইনস্টল করা হয়েছে। তাতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আগের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যায় বেপরোয়া বাইকচালককে জরিমানা করা যাবে। এর পাশাপাশি ‘ম্যানুয়াল’ পদ্ধতিও থাকছে আগের মতোই। উল্লেখ্য, চলতি বছর বিনা হেলমেটে বাইক চালানোর ক্ষেত্রে ট্রাফিক জরিমানার পরিমাণ এক ধাক্কায় বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। পুলিস সূত্রে দাবি, জরিমানার অঙ্ক বৃদ্ধির ফলে রাস্তায় হেলমেট ছাড়া বাইক চালানোর প্রবণতা কিছুটা কমেছে। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১-এ এই ক্ষেত্রে মামলার সংখ্যাও কমেছে। তবে চিন্তা বাড়াচ্ছে একাংশ। তাদের মধ্যে এখনও পর্যাপ্ত সচেতনতা আসেনি। তাঁদের সতর্ক করতে করতে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে কলকাতা পুলিস। বাইক বা স্কুটার চালকের মাথা ফাঁকা থাকলেই ঘাড়ে বসছে ১,০০০ টাকার জরিমানা।