বাংলার মুখে কেন্দ্র সরকারের অনেক খামতিই এখন পুষিয়ে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। যেমন প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তফসিলি জাতি, উপজাতি, ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের প্রি-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু গরিব পড়ুয়ারা যাতে বৃত্তি থেকে বঞ্চিত না হয়, তার জন্য রাজ্যের কোষাগার থেকেই তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের সরকার। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে এই লক্ষ্য পূরণের জন্য আগামী আর্থিক বছরের বাজেটে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ বরাদ্দও করা হবে। তফসিলি জাতি, উপজাতি বা ওবিসি শ্রেণিভুক্ত কোনও ছাত্রছাত্রীর পারিবারিক আয় বার্ষিক আড়াই লক্ষ টাকার কম হলে কেন্দ্রের তরফে এতদিন বৃত্তি মিলত। যে পড়ুয়ারা বাড়িতে থেকে পড়াশুনো করে, তারা প্রতি মাসে ২২৫ টাকা এবং আবাসিক ছাত্রছাত্রীরা ১০ মাসের জন্য প্রতি মাসে ৫২৫ টাকা করে পেয়ে থাকে এই স্কলারশিপে। আর বই কেনার খরচ বাবদ এককালীন এই দুই ধরনের পড়ুয়া যথাক্রমে ৭৫০ এবং ১০০০ টাকা করে পায়। কিন্তু এখন মোদি সরকার সেই বৃত্তি বন্ধ করে দিয়েছে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেনীর পড়ুয়াদের জন্য। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে এখন শুধুমাত্র নবম ও দশম শ্রেণির যোগ্য পড়ুয়ারাই ওই বৃত্তি পাবে। বঞ্চিত হতে হবে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের। এর দরুণ বাংলার বুকে বসবাস করা ও এতদিন ধরে বৃত্তির সুযোগ পেত যারা সেই সব তফসিলি জাতি, উপজাতি বা ওবিসি শ্রেণিভুক্ত ছাত্রছাত্রীরা যাতে এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত থেকে না যায় তার জন্য পদক্ষেপ করছে মমতার সরকার। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কেন্দ্রের বন্ধ করে দেওয়া প্রকল্প নিজেই চালাবে রাজ্য। এই প্রকল্পের জন্য এতদিন যে অর্থ বরাদ্দ হত তার ৭৫ ভাগ দিত কেন্দ্র সরকার। ২৫ ভাগ দিত রাজ্য সরকার। এখন কেন্দ্র যেহেতু প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত বৃত্তির খরচ আর বহণ করতে রাজি নয় তাই এই অংশের খরচ রাজ্য সরকার একাই বহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এতদিন প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত পড়ুয়াদের বৃত্তি দিতে কেন্দ্র সরকার বই কেনার খরচ বাবদ যে ৭৫০ টাকা করে দিত তা বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করা হবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে কিছু বৃদ্ধি হবে কি না, তা এখনও আলোচনার স্তরে রয়েছে।