খেলা

নিউজিল্যান্ডকে ১২ রানে হারালো ভারত

নিউজিল্যান্ডকে ১২ রানে হারালো ভারত। এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ভারত। শুভমান গিলের বিধ্বংসী ডাবল সেঞ্চুরিতে ভর করে ভারত তুলেছিল আট উইকেটে ৩৪৯। এই রান তাড়া করতে নেমে নিউজিল্যান্ড থেমে গেল ৩৩৭ রানে। ১২ রানে জিতে রোহিতরা সিরিজে ১-০ এগিয়ে গেল। এদিনও রোহিত শর্মা ও গিলের ওপেনিং জুটিতেই ভরসা রেখেছে টিম ম্য়ানেজমেন্ট। এদিনও ওপেনে সিনিয়র-জুনিয়র কম্বিনেশনই দেখা গেল। রোহিত ৩৮ বলে ৩৪ করে ফিরে যান। ব্লেয়ার টিকনারের বলে পর বাকিটা বুঝে নিলেন গিল। বছর তেইশের পঞ্জাবের ব্য়াটার গত রবিবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে, ঠিক যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই এদিন শুরু করলেন। তিরুঅনন্তপুরমের মেজাজেই উপলে ব্যাট করলেন গিল। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৯৭ বলে ঝকঝকে ১১৬ রানের ইনিংস খেলার তিন দিনের মধ্যে গিল হাঁকালেন দ্বি-শতরান। দেশের জার্সিতে পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে করলেন তৃতীয় সেঞ্চুরি। ফের একবার বুঝিয়ে দিলেন যে, কেন তাঁকে আগামীর ব্যাটিং মহারথী হিসাবে ধরা হচ্ছে।  রোহিত ফেরার পর বিরাট কোহলি ও ঈশান কিশানের ওপর প্রত্যাশার পারদ ছিল অনেকটাই ওপরের দিকে। কারণ কোহলি রয়েছেন আগুনে ফর্মে। শেষ ম্যাচে তিনি শ্রীলঙ্কার বোলারদের ক্লাব স্তরে নামিয়ে এনে ১১০ বলে ১৬৬ রান করেছিলেন। কেরিয়ারের ৪৬ তম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কোহলি এদিন ১০ বলে ৮ রান করে বোল্ড হয়ে যান। মিচেল স্যান্টনারের স্পিনই বুঝে উঠতে পারেননি বিরাট রাজা। অন্যদিকে ঈশানকে নিয়েও ম্য়াচের আগে প্রচুর কথা হয়েছিল। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পঞ্চাশ ওভারের ফরম্যাটে দ্রুততম দ্বি-শতরানের রেকর্ড করেছিলেন ঈশান। এরপরেও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টানা তিন ম্যাচ তিনি ছিলেন রিজার্ভে। যা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়। ব্যক্তিগত কারণের জন্য কেএল রাহুল নেই এই সিরিজে। স্বাভাবিক ভাবেই দরজা খুলেছে ঈশানের জন্য। ম্যাচের আগের দিন রোহিত বলেছিলেন যে,  ‘ঈশান ব্যাট করবে মিডল-অর্ডারে। আমি আনন্দিত যে, ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দুরন্ত নক খেলার পর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে রান করতে পারবে।’ ঈশান চারে নেমে হতাশই করলেন। ১৪ বলে মাত্র ৫ রান করে তিনি আউট হয়ে যান। লকি ফার্গুসনের বলে ল্যাথামের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। গিলের হাত শক্ত করতে এসেছিলেন ‘মিস্টার ৩৬০’ সূর্যকুমার যাদব। তবে উপলে সূর্যের তেজ দেখা গেল না। গিলের সঙ্গে জুটি বেঁধে ৫৩ বলে ৬৫ রান যোগ করলেন স্কোরবোর্ডে। ২৬ বলে ৩১ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ফেরেন বিশ্বের এক নম্বর টি-২০ ব্যাটার। ড্যারি মিচেলের বলে স্যান্টনারের হাতে ক্যাচ তুলে ফিরে যান। সূর্য যখন ফেরেন, তখন ভারতের স্কোর ২৮.৩ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে ১৭৫। এরপর গিল পাশে পান হার্দিক পাণ্ডিয়াকে। এই মুহূর্তে ভারতের এক নম্বর অলরাউন্ডার ছয়ে নেমেছিলেন। গিলের সঙ্গে জুটিতে ৬৭ বলে ৭৪ রান যোগ করেন স্কোরবোর্ডে। পাণ্ডিয়াও লম্বা ইনিংস খেলতে পারলেন না। ৩৮ বলে ২৮ রান করে মিচেলের বলে আউট যান তিনি। যদিও হার্দিকের আউট নিয়ে বিতর্ক রয়েই যাচ্ছে। এরপর সাতে নেমে ওয়াশিংটন সুন্দর ১৪ বলে ১২ রান করে আউট হয়ে যান। ভারতের রান তাড়া করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের হাফ ডজন উইকেট চলে গিয়েছিল ১৩১ রানে। তখন সবে ২৯ ওভারের খেলা চলছিল। মনে হচ্ছিল নিউজিল্যান্ড ২০০ রানের মধ্যেই গুটিয়ে যাবে। কিন্তু কেউ আগাম অনুমান করতে পারেননি যে, সাতে ব্যাট করতে নামা মিশেল ব্রেসওয়েল অন্য পরিকল্পনা নিয়েই আজ মাঠে নেমেছেন। একা হাতে দলকে জেতাবেন বলেই ঠিক করে নিয়েছিলেন। ব্রেসওয়েল দোসর হিসেবে পান মিচেল স্যান্টনারকে। ১০২ বলের পার্টনারশিপ গড়েন তাঁরা। স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ১৬২ রান। ৪৫ বলে ৫৭ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে আউট হন স্যান্টনার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লড়াই জারি রাখেন ব্রেসওয়েল। শেষ ওভারে নিউজিল্যান্ডের জেতার জন্য ৬ বলে ২০ রান প্রয়োজন ছিল। মনে হচ্ছিল যে, এই অবস্থা থেকে ব্রেসওয়েল ম্যাচ বার করে আনবেন। কিন্তু তা হতে দেননি শার্দূল ঠাকুর। শেষ ওভারে তার ওপর ভরসা রেখেছিলেন রোহিত। যদিও শার্দূলের প্রথম জোড়া ডেলিভারিতেই বুক কেঁপে গিয়েছিল। ব্রেসওয়েল শার্দূলকে স্বাগত জানান বিরাট ছক্কা হাঁকিয়ে। এরপরের বল শার্দূল ওয়াইড করেন। কিন্তু তৃতীয় বলেই শার্দূল দুরন্ত ইয়র্কারে ব্রেসওয়েলকে প্লাম এলবিডব্লিউ করে আউট করে দেন। এদিন মহম্মদ সিরাজ চার উইকেট নেন। দুইটি করে উইকেট পান কুলদীপ ও শার্দূল। একটি উইকেট নেন শামি। শামি এদিন হাতে চোট পেয়েছিলেন। যদিও চোট তেমন গুরুতর নয়। ফিজিওদের তত্ত্বাবধানে আর আইস প্যাক নিয়েই ঠিক হয়ে যান তিনি। পুরো কোটার ১০ ওভার বল করেন।