বিপর্যয়ের পর দু’দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু কম্পন (আফটার শক) থামার নাম নেই। বুধবারও সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ কেঁপে উঠেছে তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ প্রদেশের নুরদাগি জেলা। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৪.৩ মাত্রার। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ঘর-বাড়ির ধ্বংসস্তূপের তলায় এখনও চাপা পড়ে বহু মানুষ। তাঁদের বাঁচার আশা ক্রমশ ফিকে হচ্ছে। উদ্ধারকারীদের হাতে সময় বড্ড কম। জোরকদমে ইট-কংক্রিটের চাঙড় সরানো চলছে সর্বত্র। কোথাও সাফল্য আসছে, কোথাও শত পরিশ্রমের পরও মন ভেঙে দিচ্ছে নিথর শরীর। এখন পর্যন্ত পাওয়া হিসেবে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহত মানুষের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তুরস্কে নিহত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৩৯১। সিরিয়ায় ২ হাজার ৯৯২ জন। দুই দেশ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত নিহত ১৫ হাজার ৩৮৩ জন। মৃতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছুঁইছুঁই। নিখোঁজ বহু। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক ভারতীয়ও। কাজের সূত্রে তিনি তুরস্কে গিয়েছিলেন। ভূমিকম্পের পর থেকে তাঁর খোঁজ মিলছে না বলে দাবি ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের। মন্ত্রকের সচিব (পশ্চিম) সঞ্জয় ভার্মা জানিয়েছেন, তাঁর পরিবার ও বেঙ্গালুরুর নিয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সরকার যোগাযোগ রেখে চলেছে সরকার। আরও ১০ জন ভারতীয় আটকে পড়েছেন তুরস্কের প্রত্যন্ত এলাকায়। তবে তাঁরা এখন সুরক্ষিত। তুরস্কের ভূকম্প দুর্গত অঞ্চলগুলিতে উদ্ধারকাজে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার কর্মী। কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি এতই ভয়াবহ যে, এখনও বহু জায়গায় পৌঁছানো যায়নি। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ এরদোয়ান জানিয়েছেন, দেশের সাড়ে আট কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষই বিপর্যয়ের কবলে। গৃহযুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ার অবস্থা আরও খারাপ। সেখানে পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছয়নি। উদ্ধারকারী দলের সংখ্যাও অপ্রতুল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠন (হু)-র এক পদস্থ আপৎকালীন আধিকারিকও সেখানকার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।