দেশ

অপারেশন লোটাস, শিবকুমারকে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীর টোপ দিয়ে সরকার গড়ার পরিকল্পনা বিজেপির!

ভোটে হেরেও কর্ণাটকে সরকার গড়া নিয়ে আশা ছাড়তে নারাজ বিজেপি। সৌজন্যে কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দল। কর্ণাটকে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতা ডি শিবকুমারের বদলে যদি প্রবীণ সিদ্ধারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বেছে নেয় কংগ্রেস, তবেই শুরু হবে ‘অপারেশন লোটাস’। তাই আপাতত অপেক্ষা। আজ বুধবার বেঙ্গালুরুতে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। তারপরই মাঠে নেমে পড়বেন বিজেপির অপারেশন ম্যানেজাররা। হাতের কাছে এমন উদাহরণ তো কম নেই। প্রথম উদাহরণ তো অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সংগঠনে দক্ষ এই নেতার নাম অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ভাবেইনি কংগ্রেস হাইকমান্ড। শেষমেষ দল ত্যাগ করে এখন তিনি বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, সমগ্র উত্তর-পূর্বে বিজেপির হয়ে কলকাঠি নাড়ার মূল কারিগর তিনিই। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। ২০১৮ সালে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের জয়ের পর ভেবেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি তিনিই পাবেন। হাইকমান্ড ভরসা রেখেছিল প্রবীণ নেতা কমলনাথের উপর। নিট রিজাল্ট, ২০২০ সালের মার্চে সদলবলে বিজেপিতে যোগ দিয়ে কংগ্রেস সরকারের পতন ঘটান জ্যোতিরাদিত্য। লড়াই চলছে রাজস্থানেও। একদিকে প্রবীণ অশোক গেহলট, অন্যদিকে তরুণ শচীন পাইলট। একবার গেহলট সরকার ফেলতে তৎপরও হয়েছিলেন শচীন। পারেননি। তবে তিনি বসে নেই। চলতি বছরই রাজস্থানে ভোট। তার আগে ফের নিজের দলের সরকারের বিরুদ্ধে সরব শচীন। কর্ণাটকেও এখন এমন অবস্থা। শিবকুমার যখন-তখন বিদ্রোহ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে কী করবে বিজেপি? গৈরিক বাহিনীর অধিকাংশের মত হিমন্ত বা সিন্ধিয়ার মতো তাঁকে দলে নিলে লাভ খুব একটা হবে না। বরং শচীনের কায়দায় তাঁকে টোপ দিতে হবে। কারণ ২০১৮-এর মতো অবস্থা বিজেপির এখন নেই। সেবার তারাই ছিল একক বৃহত্তম দল। কিন্তু এবার ৭০ পেরতে পারেনি বিজেপি। তাই ঠিক হয়েছে, যদি বড় অংশের বিধায়কদের শিবকুমার কংগ্রেস থেকে ভাঙিয়ে আনতে পারেন, তবে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদে সমর্থন করবে বিজেপি। বোঝানো হবে জেডিএসকেও। অর্থাৎ ফের জোট গড়ে পিছন দরজা দিয়ে কর্ণাটকের ক্ষমতায় ফিরবে বিজেপি। শিবকুমার মঙ্গলবার দিল্লিতে স্পষ্ট বলেছেন, কংগ্রেস আমার কাছে মাতা পিতার সমান। কংগ্রেস ছাড়া আমরা সবাই শূন্য। হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত। কিন্তু এই একই কথা সিন্ধিয়া, হিমন্ত বিশ্বশর্মারাও বলেছিলেন। তাই বিজেপি আশা ছাড়তে রাজি নয়।  এদিন বেঙ্গালুরু থেকে দিল্লি এসেই সোজা ১০ জনপথে গিয়ে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন শিবকুমার। পরে ১০ রাজাজি মার্গে যান কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। একইভাবে সন্ধ্যায় পুত্র যতীন্দ্র এবং কয়েকজন বিধায়ককে দিয়ে খাড়্গের কাছে পৌঁছন সিদ্ধারামাইয়া। শিবকুমার এবং সিদ্ধারামাইয়া, উভয়ের এই সাক্ষাতের আগে সকালেই খাড়্গের সঙ্গে কথা বলে আসেন রাহুল গান্ধী। জেনে নেন তিন পর্যবেক্ষক কী রিপোর্ট দিয়েছেন। শিবকমার অবশ্য দিল্লিতে বলেছেন ‘কোনও ব্ল্যাকমেল করছি না। কাউকে পিছন থেকে ছুরিও মারব না। কংগ্রেসও ছাড়ছি না। দলেই আছি, থাকব সক্রিয় কর্মী হিসেবে।’