শহরে বায়ুদূষণ রোধে নতুন প্রযুক্তি নিয়ে এল ‘পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ’। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শহরের বায়ুদূষণের প্রায় ৫০ শতাংশ হয় রাস্তার ধুলো এবং যানবাহনের ধোঁয়ার কারণে। এবার দূষণ সঠিকভাবে পরিমাপের জন্য এবং তা প্রতিরোধের জন্য দেশের মধ্যে প্রথমবার বাসের ছাদে বসানো হচ্ছে ‘বাস রুফ মাউন্টেড এয়ার পিউরিফিকেশন সিস্টেম’ নামে এক যন্ত্র। যাতায়াতের পথে এই যন্ত্রের মাধ্যমে বায়ুর মান পরিমাপ করার কাজ করবে বাস। এটিতে রয়েছে একটি এয়ার ফিল্টারও। তা তথ্য সংগ্রহ করবে। সেই তথ্য সঙ্গে সঙ্গে পর্ষদের কন্ট্রোল রুমে পাঠিয়ে দেবে। যন্ত্রের ওই এয়ার ফিল্টারটি দূষিত বাতাস গ্রহণ এবং বিশুদ্ধ বাতাস ছড়াতে সক্ষম। এসি বাসের ভিতরে অনেক সময় যাত্রীদের শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের অনুরোধে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবার এই সমস্যারও সমাধান করল। এই যন্ত্রের মাধ্যমে বাসের ভিতরের দূষিত বাতাসকে বাইরে বের করে দেওয়া যাবে। ৫০তম বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ নিউটাউনের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সেখানে পরিবেশ মন্ত্রী মানসরঞ্জন ভুঁইয়া সহ পর্ষদের অন্যান্য আধিকারিকরা সেই যন্ত্র বসানো বাসের উদ্বোধন করেন। মন্ত্রী বলেন,‘এটি পাইলট প্রজেক্ট। আপাতত ২০টি বাসে এই যন্ত্র লাগানো হচ্ছে।’ এর পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন কারখানার বিরুদ্ধে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে অভিযোগ এসেছে যে, সন্ধ্যার পর অনেকে এয়ার পলিউশন কন্ট্রোল ডিভাইস খুলে নিচ্ছে। তখন কারখানাগুলি থেকে বিপুল পরিমাণ দূষিত বাতাস পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ছে। সেটা মোকাবিলার জন্য পর্ষদ এবার ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি শুরু করতে চলেছে। ড্রোনে বায়ুর মান পরিমাপের জন্য বিশেষ যন্ত্র থাকবে। সেই যন্ত্র তথ্য সংগ্রহ করে সঙ্গে সঙ্গে পর্ষদের কন্ট্রোল রুমে পাঠিয়ে দেবে। চলতি বছর পরিবেশ দিবসের লক্ষ্য ছিল, ‘প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা’। মানসবাবু বলেন, ‘প্লাস্টিক বন্ধের ক্ষেত্রে গণ সচেতনতা সবার আগে প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্লাস্টিক প্রস্তুতকারী সংস্থাদের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। প্লাস্টিক নিধনের কাজে সরকার সবসময় পাশে থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্লাস্টিক বিজ্ঞানের এমন একটা উদ্ভাবন যা এখন অভিষাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’