কলকাতা

৪টি মিষ্টি হাব তৈরি হবে, মিষ্টি ব্যবসায়ীদের জমি দেওয়ার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে মিলন উৎসবের সভায় বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘১০ কোটি মানুষ মিষ্টি খায়৷  এমন কেউ নেই যে মিষ্টি খান না। তাই তাঁদের কথা ভেবেই, কলকাতায় ৪টি মিষ্টি হাব তৈরি করা হবে।’এদিন তিনি জানিয়ে দিলেন, রাজ্যের সব জেলার ভালো মিষ্টিগুলিকে এক ছাদের নিচে আনতে শহরে তৈরি হবে নয়া মিষ্টি হাব। এর জন্য ইকো পার্কের কাছে ২০ কাঠা জমি দেওয়ার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের ছোট ও মাঝারি শিল্পের উপর আরও জোর দিতে উদ্যোগী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে এক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মৌলালির কাছে মিষ্টি হাব হিসেবে একটা বিল্ডিং হচ্ছে। সেখানে ২০ টা স্টল থাকবে। ফুড কোড থেকে প্যাকেজিং সব থাকবে। এটা MSME দফতর থেকে করা হচ্ছে ‘মিষ্টি উদ্যোগ’ নামে। এর পাশাপাশি একটা ক্লাস্টার করা হচ্ছে কলকাতার মধ্যে। আর একটা আপনাদের আমি করে দেব। আপনারা আমাকে বলেছেন ১০ কাঠা জমি লাগবে। আমি একটা মিষ্টিহাব তৈরি করেছি বিশ্ববাংলা সেন্টারের কাছে ইকো পার্কের ওখানে। সেই মিষ্টি হাবের বিপরীতে ২০ কাঠা জমি আপনাদের দেওয়া হবে। ১ টাকা মূল্যে। আর এর নাম হবে ‘নবান্ন’র সঙ্গে মিলিয়ে ‘মিষ্টান্ন’। আপনারা চেষ্টা করবেন সব জেলার বিখ্যাত মিষ্টিগুলি ওখানে আনার। যাতে এক ছাতার নিচে গোটা বাংলার মিষ্টির সঙ্গে পরিচয় হয় মানুষের।” এর পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পরবর্তী মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে আসার জন্য।” এর পাশাপাশি মিষ্টি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে একাধিক পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, “চিরাচরিত ধারা ভেঙে নতুন নতুন ভাবনা নিয়ে আসতে হবে। তাহলেই মিষ্টি শিল্পে জোয়ার আসবে। আমি চাই বাংলার সব মিষ্টি ‘জিআই’ পাক। পাশাপাশি বাংলার মিষ্টি বিদেশে রফতানির দিকটিও ভাবনা চিন্তা করার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, কোনও রফতানি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করুণ। মিষ্টি ভালো করে প্যাকেজিং করে যাতে বিদেশে পাঠানো যায়। প্রথমে চাহিদা রয়েছে এমন দু, চারটি দেশে যাক। বাংলা থেকে বিদেশে ইলিশ মাছ যেতে পারলে রসগোল্লাও বিদেশ যাবে।” পাশাপাশি ব্যবসার জন্য রাজ্য সরকারের ভবিষ্যৎ প্রকল্পের কথা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভবিষ্যৎ প্রকল্পে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যবসার জন্য রাজ্য সরকার দিচ্ছে। বাইরে কাজে না গিয়ে ব্যবসা করুন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভিনরাজ্যে যাবেন না। সরকার সব রকম সাহায্য করছে আপনাদের।” তিনি বলেন, ‘কলকাতায় অনেকে বসে চাকরি, চাকরি বলে চিৎকার করে দাবি করে। সবাই নয় অনেকে। তাঁদের সঙ্গে গ্রামের মাটির যোগাযোগ নেই৷ তাঁরা জানেন না চাকরি হয় মাটি থেকে৷ প্রায় দেড় কোটি মানুষ চাকরি করতে পারবে তাতে। এখন তো ইউটিউবে নানা জিনিস চলে। এবার আপনারাও ইউটিউবে প্রচার করুন।’তাঁর কথায়, ‘আমি বীরভূমের মেয়ে বলে রামপুরহাটের মিষ্টি নিয়ে আসে অনেকে৷ ওদের আবার ভরাট মিষ্টি৷ খেতে ভাললাগে। কালোজাম ও ছানাপোড়া খেতে ভাললাগে। বোঁদে, গুজিয়া এগুলো বেশি বানান৷ মিষ্টি তৈরির লোক অনেক কমে গেছে। আগে ওদের অনেক কর্মচারী ছিল, এখন কমে গেছে। মিষ্টি হালকা করতে হবে। প্রয়োজনে আমাকে দেখিয়ে নেবেন৷ অনেকে আমাকে কুৎসা করে সারাদিন৷ আমি বলব ছোট ছোট কাজ ভীষণ কাজে লাগে৷ মিষ্টির নামই হল মিষ্টি।’