কুন্তল ঘোষের চিঠির অভিযোগের যে যুগ্ম তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল বিশেষ সিবিআই আদালত, তার উপরে বৃহস্পতিবার স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। গত ২১ অগাস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর আলিপুর সিবিআই বিশেষ আদালত যে নির্দেশ দিয়েছিল, তার উপরে স্থগিতাদেশ জারি করা হল। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার ও সিবিআই যুগ্ম অধিকর্তাকে যৌথ তদন্ত করে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ আপাতত অস্তিত্বহীন করে দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এই নির্দেশের পরে, আপাতত কলকাতা পুলিশ কুন্তল ঘোষের চিঠির অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোনও তদন্ত করতে পারবে না৷ গত ২০-২৪ ফেব্রুয়ারি হেফাজতে তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। সিবিআই এদিন আদালতে জানায়, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি, ৯ মার্চ, ২৩ মার্চ সিবিআই আদালতে পেশ করা হয়েছে কুন্তলকে। সেই সময় একবারের জন্যেও তিনি এই কথা সামনে আনেননি। সেই সময় জামিনের জন্য বিশেষ সিবিআই আদালতে আবেদন করেছিলেন কুন্তল। সেখানেও এমন কোনও অভিযোগ নেই। অথচ, সিবিআই বিশেষ বিচারক নিজের চেম্বারে ডেকে কুন্তলের সঙ্গে যখন কথা বলেন, সেই সময় তাঁর কাছে ২ টি অভিযোগ পত্র দেন কুন্তল। এদিকে, সিবিআই-কে অবশ্য জানানো হয়, অভিযোগ একটাই৷ সম্প্রতি কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় কলকাতা পুলিশ ও সিবিআই, উভয়কে যুগ্ম তদন্ত রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছিল আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত৷ আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয়েছিল ইডি থেকে সিবিআই৷ সিবিআই আদালতের নির্দেশ নিয়ে তাই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷ তাঁর মুখ দিয়ে বিশেষ কারও নাম বলানোর জন্য চাপ দিচ্ছে ইডি৷ পুলিশের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে এমনই অভিযোগ এনেছিলেন প্রাথমিক দুর্নীতি মামলার অন্যতম অভিযুক্ত তথা প্রাক্তন তৃণমূল যুব নেতা কুন্তল ঘোষ৷ যা নিয়ে তোলপাড় হয়ে যায় রাজ্য রাজনীতি৷ এমনকি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদেরও পরামর্শ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ তারপরে জল অনেক দূর গড়িয়েছে৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে মামলা এসেছে বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে৷ এরই মধ্যে, সম্প্রতি চিঠি মামলায় সিবিআই ও কলকাতা পুলিশকে একসঙ্গে বা আলাদাভাবে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত৷ আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সেই রিপোর্ট পেশ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে৷ আর কলকাতা পুলিশ ও সিবিআইয়ের যুগ্ম তদন্ত রিপোর্ট পেশের নির্দেশেই ক্ষুব্ধ ছিল সিবিআই।