জেলা

মুখ্যমন্ত্রীকে কুরুচিকর ভাষায় চিঠি দেওয়ার উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

অস্বস্তিতে বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।উপাচার্য হয়ে আসা থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। বুধবার বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পেলেন সঞ্জয়কুমার মল্লিক। এর মাঝেই ফের অস্বস্তিতে বিদ্যুৎ। মুখ্যমন্ত্রীকে ৫ পাতার চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। এবার সেই চিঠিকে কেন্দ্র করেই থানায় অভিযোগ দায়ের হল তাঁর নামে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ‘কুরুচিকর মন্তব্য’ করার অভিযোগে  উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হল শান্তিনিকেতন থানায়। অভিযোগকারী প্রলয় নায়েক হুগলির একটি কলেজে অধ্যাপনা করার পাশাপাশি, বীরভূম জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদেরও সভাপতি। এছাড়াও অভিযোগপত্রে তিনি নিজেকে বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী বলেও দাবি করেছেন। তার মতে, বিশ্বভারতীর মতো ঐতিহ্যপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাডে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে যে চিঠি লেখা হয়েছে তা মুখ্যমন্ত্রীর জন্য অবমাননাকর। অত্যন্ত কুরুচিকর ভাষা ব্যবহার করে তিনি এই চিঠি লিখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এমনকী যে ভাষা তিনি ব্যবহার করেছেন তা আদতে প্ররোচনামূলক। আর এই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষও করলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ‘নিজের চোখ দিয়ে বাস্তব না দেখে, মুখ্যমন্ত্রী কান দিয়ে দেখছেন’ বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন উপাচার্য।  বিষয়টি যে কোনও সময় রাজ্যে বড়সড় অশান্তির কারণ হতে পারে বলেও  পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছেন অধ্যাপক প্রলয় নায়েক। পুলিশকে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনেস্কো স্বীকৃতি মেলার পর থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত শান্তিনিকেতনে। পরবর্তীকালে ফলকের বয়ান ঘিরে বিশ্বভারতীয় উপাচার্য সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন রাজ্য সরকারের সঙ্গে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঐতিহ্যমণ্ডিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতির স্মারক হিসেবে লাগানো ফলকে ব্রাত্য হয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রাজ্য সরকারের পাশাপাশি এই বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও।  শান্তিনিকেতন থানার দ্বারস্থ হয় মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামাঙ্কিত ট্রাস্ট। শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলকে কেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম থাকবে না সেই বিষয়ে উপাচার্যকে শান্তিনিকেতন থানায় তলবও করা হয়। বুধবারই বিশ্বভারতীতে উপাচার্য পদে বিদ্যুতের কর্মজীবনের শেষ দিন। তার ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে, মঙ্গলবার, বিদ্যুৎ চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে। যে চিঠির উদ্দেশ্য নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। সেই চিঠির ভাষাতেই আপত্তি জানিয়ে এ বার পুলিশের কাছে গেলেন প্রলয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রলয় বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী। পাশাপাশি, তিনি বীরভূম জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি। একাধিক বার তাঁকে তৃণমূলের মঞ্চেও দেখা গিয়েছে। স্বভাবতই, সরকারি পদাধিকারীর এ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে থানায় যাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে।