ক্রাইম

বেহালায় স্থায়ী চাকরির টোপ দিয়ে মহিলা কর্মীকে ধর্ষণ শিক্ষকের

মাদক মেশানো ঠান্ডা পানীয় খাইয়ে যুবতীকে অচৈতন্য করার পর ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বেহালার একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারিণীও ওই স্কুলের অস্থায়ী কর্মী। অভিযুক্ত তাঁকে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সরিষার হোটেল ও নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে সেপ্টেম্বর মাস থেকে তাঁর সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আনলে যুবতীর নগ্ন ছবি ভাইরাল করার হুমকিও দেওয়া হয়। যুবতীর অভিযোগের ভিত্তিতে রিজেন্ট পার্ক থানা ধর্ষণ, মারধর সহ একাধিক ধারায় কেস রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনার পর থেকেই খোঁজ নেই অভিযুক্ত শিক্ষকের। পুলিসের কাছে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ওই যুবতীর বাড়ি রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকায়। তাঁর বিয়ে হয়েছে সরশুনাতে। স্বামী অসুস্থ হওয়ায় কাজকর্ম করতে পারেন না। আয় না থাকায় সংসার চালাতে ও সন্তানের স্কুলের খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মহিলাকে। বেহালার একটি সরকার পোষিত প্রাথমিক স্কুলে গ্রুপ ডি পদে অস্থায়ী চাকরি জোগাড় করেন তিনি। সেখানেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় অভিযুক্ত শিক্ষকের। মহিলার আইনজীবী মৌসুমি দেব জানিয়েছেন, অভিযুক্ত যেচেই পরিচয় করে যুবতীর সঙ্গে। তাঁর কাছে পরিবারের কথা জানতে চাইলে সরল বিশ্বাসে সমস্ত কিছু খুলে বলেন তিনি। ওই শিক্ষক বলে, যুবতীকে সে ভালো চাকরি ও ঋণের ব্যবস্থা করে দেবে। বায়োডেটা সহ সমস্ত নথি জমা দিতে মহিলাকে হাওড়ায় বাড়িতে আসতে বলে ওই শিক্ষক। মহিলা সেখানে গিয়ে সমস্ত নথির ফটোকপি দিয়ে আসেন। পুলিসের জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে ওই শিক্ষক মহিলাকে ফোন করে চাকরি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য  সরিষা এলাকার একটি হোটেলের সামনে আসতে বলে। অভিযুক্তের কথায় বিশ্বাস করে সেখানে পৌঁছে যান যুবতী। তাঁর দাবি, সেখানে খাবার ও  ঠান্ডা পানীয় কেনে অভিযুক্ত। অভিযোগকারিণীর বক্তব্য, কোল্ড ড্রিঙ্ক খাওয়ার পরই তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন। তারপর আর কিছু জানা নেই। দীর্ঘক্ষণ পরে হুঁশ ফিরলে তিনি দেখেন হোটেলের রুমে শুয়ে রয়েছেন অর্ধনগ্ন হয়ে। তখনই তিনি বুঝতে পারেন অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে ধর্ষণ করেছে ওই শিক্ষক। শিক্ষকের কাছে জবাব চাইলে সে বলে, যুবতীকে ভালোবেসে সে এই কাজ করেছে। গোটা বিষয়টি মোবাইলে রেকর্ডিং করা আছে। ধর্ষণের কথা প্রকাশ্যে আনলে তাঁর ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। মহিলা একাধিকবার ওই ছবি মুছে ফেলতে অনুরোধ করলেও ওই শিক্ষক তা শোনেনি। উল্টে ওই ছবি দেখিয়ে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে অভিযুক্ত। মহিলাকে ফের বাধ্য করা হয় হোটেল ও শিক্ষকের সরশুনায় অন্য একটি ফ্ল্যাটে যেতে। লাগাতার এভাবে তাঁকে ধর্ষণ করে ওই শিক্ষক। চলতি মাসে আবার তাঁকে যেতে বললে তিনি রাজি হননি। অভিযোগ, এরপরই আপত্তিকর ছবি স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দেয় অভিযুক্ত। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা বাধে। অভিযোগ, বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর স্কুলের কয়েকজন আপসে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে বলেন। কিন্তু তাতে তিনি রাজি হননি। এরপর তিনি রিজেন্ট পার্ক থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। যুবতীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিস।