জেলা

সিএএ নিয়ে অমিত শাহের হুঁশিয়ারি, রাজ্যসভায় মতুয়া মুখ মমতাবালা ঠাকুর

অমিত শাহকে পালটা মোক্ষম চাল দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটের আগেই সিএএ কার্যকর করার কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার মোকাবিলায় মতুয়া মুখ মমতাবালা ঠাকুরকে বেছে নিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মতুয়া সঙ্ঘাধিপতি মমতাবালাকে রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে তৃণমূল। পুনরায় রাজ্যসভায় যাচ্ছেন সুস্মিতা দেব। তাঁর রাজ্য অসমেও নাগরিকত্ব আইন একটি বড় ইস্যু। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, মমতাবালা, সুস্মিতাকে প্রার্থী করে তৃণমূল নেত্রী বুঝিয়ে দিলেন, সিএএ’র বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই জারি থাকবে। সর্বক্ষেত্রে মোদি সরকার যখন ৩৩ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণ কার্যকর করতে পারছে না, তখন মমতা একধাপ এগিয়ে সংসদে আরও বেশি সংখ্যায় মহিলা প্রতিনিধি পাঠাচ্ছেন। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৫টি রাজ্যের ৫৬টি রাজ্যসভা আসনে ভোট হতে চলেছে। তাতে তৃণমূলের চার প্রার্থীর মধ্যে তিনজনই মহিলা। পশ্চিমবঙ্গে পাঁচটি আসনের জন্য ভোট হবে। বিধায়ক সংখ্যার নিরিখে চারটি আসনে জয় নিশ্চিত তৃণমূলের। একটিতে জিতবে বিজেপি। রবিবার চার প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে তৃণমূল। মমতাবালা ঠাকুর, সুস্মিতা দেব ছাড়া তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন সাংবাদিক ও লেখিকা সাগরিকা ঘোষ এবং নাদিমুল হক। সংখ্যালঘু মুখ নাদিমুল হক তৃতীয়বারের জন্য সংসদে পা রাখতে চলেছেন। বাদ পড়েছেন শান্তনু সেন, শুভাশিস চক্রবর্তী এবং আবীররঞ্জন বিশ্বাস। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মতুয়াদের নাগরিকত্ব ‘টোপ’ দিয়ে ভোটব্যাঙ্ক ভরিয়েছিল বিজেপি। বনগাঁ, রানাঘাটের মতো মতুয়া অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে পদ্মফুল ফুটেছিল। কিন্তু তারপর আরও একটি লোকসভা নির্বাচন এসে গেলেও সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট (সিএএ) কার্যকর করতে পারেনি বিজেপি। এর প্রভাব আসন্ন লোকসভা ভোটে পড়বে বুঝেই শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘লোকসভা ভোটের আগেই কার্যকর হবে সিএএ। এ ব্যাপারে কোনও সংশয় থাকা উচিত নয়।’ তৃণমূল সুপ্রিমোর অবশ্য ঘোষিত অবস্থান, বাংলায় কোনওভাবে সিএএ কার্যকর হতে দেবেন না তিনি। এই আবহে গেরুয়া শিবির মতুয়া ভোট ধরে রাখতে নানা কৌশলের আশ্রয় নেবে ধরে নিয়ে পাল্টা চাল দিয়েছেন পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ মমতা। বড়মা বীণাপাণি দেবীর মৃত্যুর পর মমতাবালা ঠাকুরকে ‘মা’ হিসেবে সম্বোধন করেন মতুয়া ভক্তরা। ২০১৫ সালের উপনির্বাচনে জিতে বনগাঁর সাংসদও হয়েছিলেন তিনি। তবে ২০১৯ সালে তিনি হেরে যান। এই প্রেক্ষিতে লোকসভা ভোটের আগেই মমতাবালাকে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে তৃণমূল মতুয়াদের পাশে থাকার বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।