নিউইয়র্ক: রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার আগে নিউইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সদর দপ্তরের সামনের রাস্তা মুখর হয়ে উঠল পাকবিরোধী স্লোগানে। যে ইমরান কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বলে ভারতের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। তাঁর সরকারের বিরুদ্ধেই সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখালেন আমেরিকায় বসবাসকারী একদল পাকিস্তানি। এর ফলে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে পাক প্রশাসন।শুক্রবার সকালে নিউইর্য়কের ব্যস্ত রাস্তায় প্রচুর হলুদ রঙের ট্যাক্সি ও মিনি ট্রাকে ডিজিটাল ডিসপ্লে ও পোস্টার লাগিয়ে অভিনব পদ্ধতিতে প্রতিবাদ জানানো হল। পাকিস্তানে কীভাবে সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত হচ্ছে তার কিছু ছবি তুলে ধরা হল। আমেরিকায় বসবাসকারী পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের সংগঠন ‘ভয়েস অফ করাচি’-র তরফে ওই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছিল। এখানে হাজির হওয়া ট্যাক্সি ও ট্রাকে টাঙানো কিছু ডিসপ্লে-তে লেখা ছিল, ‘পাকিস্তান: মানবাধিকার নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের সনদ মানে না যে দেশ’। আরও কিছুতে লেখা ছিল, ‘মোহাজিররা চায় পাকিস্তানের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক রাষ্ট্রসংঘ।’এপ্রসঙ্গে ওই বিক্ষোভের অন্যতম নেতা ও করাচির প্রাক্তন মেয়র ওয়াসে জালিল বলেন, ‘অন্যায় হলেও এখনও পর্যন্ত মোহাজিরদের পাকিস্তানের মাটিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করতে দেওয়া হয় না। তাই বাধ্য হয়ে এইভাবে প্রতিবাদ জানাতে হচ্ছে আমাদের। আমরা চাই রাষ্ট্রসংঘ বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক। তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এই পথ নিতে হয়েছে। কারণ এটা আমাদের নৈতিক, মানবিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লড়াই।’তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে মোহাজিরদের উপর অত্যাচার করছে পাকিস্তান। এর ফলে ২৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও কয়েক হাজার। পাকিস্তান আমাদের যে অবস্থা করেছে, তা পুরো বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চাইছি।’এই সংস্থার চেয়ারম্যান নাদিম নুসরত বলেন, ‘আসলে আমরা চাই গোটা বিশ্বের সামনে পাকিস্তানের মুখোশ খুলে যাক। নিজেদের দেশে থাকা সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করে কাশ্মীর নিয়ে মিথ্যে অভিনয় করছেন ইমরান। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভাতেও এই ইস্যুতে বক্তব্য রাখতে যাচ্ছেন। তাই তার আগে তাঁর প্রশাসনের কুকীর্তির কথা সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আমরা। এটা খুবই লজ্জাজনক যে পাকিস্তান বলে ভারত মুসলিমদের বিরুদ্ধে। কিন্তু, তারা নিজেরাই সংখ্যালঘুদের জন্য নরকে পরিণত হয়েছে। যখন তারা কাশ্মীর নিয়ে কথা বলে ঠিক তখনই বাংলাদেশের রেডক্রশ ক্যাম্পগুলিতে পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসা পাঁচ লক্ষের বেশি সংখ্যালঘু মানুষ বসবাস করছেন। আসলে ওরা নিজের দেশে থাকা মানুষকে অবহেলা করে বিশ্বের অন্য দেশে থাকা মানুষদের নিয়ে বড় বড় কথা বলে।’