ছেলেধরা সন্দেহে মহিলা ও তাঁর সঙ্গীকে গণপিটুনির জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল উত্তর 24 পরগনার জেলা সদর বারাসত ।পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের লাঠিচার্জ । কিছুই বাদ গেল না । পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে একসময় পুলিশকেই মাইকিং করে ঘটনাটিকে গুজব বলে প্রচার করতে হয় । গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয় সাধারণ মানুষকে । এরপরই পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয় । গুজব ছড়ানো এবং গণপিটুনির ঘটনা মোবাইলবন্দি করে রাখার অভিযোগে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে । এর মধ্যে গণপিটুনির ঘটনাতেও কয়েকজন জড়িত আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ । সম্প্রতি কাজিপাড়ায় নিখোঁজ ১১ বছরের বালকের পচাগলা দেহ উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই ছেলেধরার গুজবে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছে বারাসত জুড়ে ।এনিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও সক্রিয় হয়ে ওঠে একশ্রেণির মানুষ । যদিও, পুলিশের তরফে আগেই সংবাদ মাধ্যমের কাছে দাবি করে বলা হয়, এই ধরনের ঘটনার কোনও ভিত্তি নেই । পুরোটাই গুজব । যারা গুজব ছড়াচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে পুলিশের তরফে ৷ তারপরও কিন্তু ছেলেধরার গুজব চলছেই বারাসত শহর জুড়ে । তা স্পষ্ট এদিনের এই ঘটনা থেকেই । সূত্রের খবর, ছেলেধরার গুজবের জেরে বুধবার সকালে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে বারাসতের কামাখ্যা মন্দির সংলগ্ন এলাকা । এদিন সকালে প্রথমে ছেলেধরার গুজব ছড়ায় বারাসত পৌরসভার 29 নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষপাড়ায় । গুজবের জেরে সেখানে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা । সেই ঘটনার রেশ গিয়ে পড়ে পৌরসভার ২২ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংযোগস্থল কামাখ্যা মন্দির চত্বরে । সেখানেও ছেলেধরার গুজবে এক মহিলাকে বেধড়ক মারধর করে উত্তেজিত জনতা । জানা গিয়েছে, এদিন সকালে কামাখ্যা মন্দির সংলগ্ন এলাকা থেকে অটোতে উঠতে যাচ্ছিলেন ওই মহিলা । সেই সময় আচমকাই অটো থেকে নামিয়ে তাঁকে ছেলেধরার তকমা দিয়ে মারধর করতে থাকে আমজনতা । কিছুক্ষণের মধ্যেই ভিড় জমে যায় । সকলেই ‘ছেলেধরা’কে দেখতে চান । মারধর ও গণপিটুনির খবর পেয়ে অকুস্থলে চলে আসে পুলিশ । কিন্তু উত্তেজিত জনতা পুলিশের উপরেই পালটা চড়াও হয় । ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি ।রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা । পরিস্থিতি সামাল দিতে বারাসত এসডিপিও’র নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ছুটে আসে ঘটনাস্থলে । আসে র্যাফও । প্রথমে বুঝিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনার চেষ্টা হলেও তাতে কোনও কাজ না-হওয়ায় জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে শেষে লাঠিচার্জ করে পুলিশ ।