মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে কেদারনাথে আটকে প্রায় ২০০ তীর্থযাত্রী। বুধবার উত্তরাখণ্ডে ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে দুই শিশু-সহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে একটি বাড়ি ধসে, আহত হয়েছেন আরও ৯ জন। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পুলিশ এবং স্থানীয় আধিকারিকদের ধসের উচ্চ সতর্কতা জারি করা করেছে। বুধবার উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ওয়াকওয়ের প্রায় ৩০ মিটার ক্ষতিগ্রস্ত। হঠাৎ ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে মন্দাকিনী নদীর জলের স্তর বেড়েছে। কেদারনাথে আটকে পড়া প্রায় ২০০ তীর্থযাত্রীদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। যারা মন্দিরে যাওয়ার পথে আটকে, তাদের নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি, কয়েকদিন আগেই উত্তরাখণ্ডের তেহরি জেলায় ভূমিধসে বহু বাড়ি ও দোকানপাট ভেসে যায়। এ ঘটনায় ৪২ বছর বয়সী এক মহিলা এবং তাঁর মেয়ে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার হরিদ্বারের ভাউরি ডেরা শান্তারশাহ গ্রামের একটি বাড়ি ভেঙে পড়লে আস মহম্মদ (১০) ও নাগমা (৮) নামে এক কিশোর নিহত হয়। আহতদের চিকিৎসা চলছে। এদিকে, তেহরি গাড়োয়াল জেলার ঘানসালি থেকে ৮ কিলোমিটার আগে মেঘভাঙা বৃষ্টির খবর পাওয়ার পর রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ) দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে এবং আহত একজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সোনপ্রয়াগে মন্দাকিনী নদীর জলস্তর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা অন্যত্র সরে গিয়েছিলেন। বুধা কেদার এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে থাটি গ্রামের তিনটি বাড়ি খালি করা হয়েছে। চামোলির বেলচোরিতে একটি বাড়ি ভেঙে পড়ে এবং এক মহিলা ও এক শিশু নিখোঁজ। এসডিআরএফের একটি দল ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। ভীম্বলির কাছে রাস্তার কিছু অংশ ভেসে যাওয়ায় ভীম্বালি গাড়োয়াল মণ্ডল বিকাশ নিগম (জিএমভিএন) কমপ্লেক্সে কেদারনাথ তীর্থযাত্রীদের আটকে দেওয়া হয়। কেদারনাথে ভারী বৃষ্টির কারণে ভীম্বলির কাছে প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিটার রাস্তা ভেসে গিয়েছে। পথে বড় বড় বোল্ডার পড়ে রয়েছে, ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করা হয়েছে। গৌরীকুণ্ড সেক্টরে নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় মন্দিরের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সবাইকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কোনও হতাহতের খবর নেই। প্রসঙ্গত, গত ১৫ জুন থেকে উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ে ৩০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি, বুধবার গভীর রাতে ভারী বৃষ্টিপাতের বিষয়ে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিবের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চল এবং ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ সম্পর্কে খোঁজ নেন। গাড়োয়াল ডিভিশনের কমিশনারের দেওয়া নির্দেশের পরে, বৃহস্পতিবার চারধাম যাত্রা নিয়ে বিশেষ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার হরিদ্বার ও ঋষিকেশের কেন্দ্রগুলিতে যাত্রার প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে।