‘লাভ জিহাদ’-এর মামলায় আরও কড়া অসম সরকার। দোষীকে দেওয়া হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা। নয়া আইন আনছে অসমের বিজেপি সরকার। ঘোষণা করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। রবিবার তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় আমরা লাভ জিহাদের কথা বলেছিলাম। শীঘ্রই এই সংক্রান্ত আইন আনা হবে। মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে দোষীর।’ রবিবার গুয়াহাটিতে ছিল রাজ্য বিজেপির এক বৈঠক। সেখানেই নিজের বক্তৃতায় ‘অন্য ধর্ম বিয়ে’ (লাভ জিহাদ নামে পরিচিত) নিয়ে মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়াও অসমে আরও কয়েকটি নয়া আইন আনার বিষয়ে ঘোষণা করেন হিমন্ত। সেগুলির মধ্যে একটি হল হিন্দু ও মুসলিদের মধ্যে জমি কেনাবেচা সংক্রান্ত আইন। হিমন্তের ঘোষণা, ‘হিন্দু ও মুসলিমরা নিজেদের মধ্যে জমি কেনাবেচা করতে পারবেন কিনা তা নিয়েও সিদ্ধান্ত নিয়েছে অসম সরকার।’ হিমন্ত বলেন, ‘সরকার এই ধরনের লেনদেনে বাধা দিতে পারে না। তবে সরকার ঠিক করেছে এই ধরনের লেনদেনের আগে সরকারি অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হবে।’ অর্থাৎ সরকার অনুমতি দিলে তবেই একজন হিন্দু তাঁর জমি একজন মুসলিমকে অথবা একজন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁর জমি হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে বিক্রি করতে পারবেন। এছাড়াও অসমের সরকারি চাকরি কারা পাবেন তা নিয়েও সরকার একটি নতুন নীতি প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে বলে জানান হিমন্ত। পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ হলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে আশ্বাসও দেন তিনি। বলেন, ‘অসমের বিধানসভায় খুব শীঘ্রই এমন একটি নীতি আসছে চলছে, যার ফলে অসমের সরকারি চাকরির সুযোগ শুধুমাত্র তাঁরাই পাবেন যাঁরা অসমে জন্মেছেন।’ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আরও বলেন, অসম সরকার রাজ্যের ১৩ টি মেডিকেল কলেজে নবজাতকদের জন্ম শংসাপত্রের সঙ্গে আধার কার্ড ইস্যু করার জন্য একটি পাইলট প্রকল্প শুরু করবে। তিনি বলেন, ‘জন্মের কয়েকদিনের মধ্যেই নবজাতক শিশুদের আধার কার্ড দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলিতেই এই প্রকল্প চালু করা হবে। এর পরে এই প্রকল্পটি গোটা রাজ্যে কার্যকর করা হবে, যাতে শিশুরা জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই আধার কার্ড পায় এবং তাদের পরিবারকে এর জন্য লাইনে দাঁড়াতে না হয়।’ উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগেই হিমন্ত দাবি করেছিলেন, ২০৪১ সালে সেরাজ্যে মুসলিমরা সংখ্যাগুরু হয়ে উঠবেন। তাঁর দাবি ছিল প্রতি ১০ বছরে মুসলিম জনসংখ্যা ৩০ শতাংশ হারে বাড়ছে। সেই তুলনায় প্রতি এক দশকে হিন্দু জনসংখ্যা বাড়ছে ১৬ শতাংশ হারে। মুসলিমদের তুলনায় হিন্দু জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেকটাই কম। অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, বর্তমানে রাজ্যের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষ।