প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শেষযাত্রা হল শুক্রবার। বৃহস্পতিবার থেকে তাঁর দেহ শায়িত ছিল পিস ওয়ার্ল্ডে। শুক্রবার সকালে সেখান থেকে দেহ বের করা হয়। তার পরে শেষযাত্রা শুরু হয় রাজ্য বিধানসভার উদ্দেশে। প্রায় আধ ঘণ্টা বিধানসভায় মরদেহ ছিল বুদ্ধবাবুর। সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় সিপিএমের রাজ্য দফতর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে। সেখানেই মরদেহ শায়িত থাকে বিকেল পর্যন্ত। কিন্তু আজ, শুক্রবার একটা বিরল চিত্র দেখা গেল বিধানসভায়। সেটি হল, যাঁরা বিধায়ক তাঁরা তো শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন। কিন্তু এখানে একজন সাংসদ এসে শেষ শ্রদ্ধা জানান। সেই ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। বিধানসভায় এসে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিধানসভার সদস্য নন। কিন্তু সাংসদ হওয়ার দৌলতে বিধানসভায় আসতেই পারেন। তাতে কোনও বাধা নেই। বিধানসভায় যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন তা অনেকেরই অজানা ছিল। তাই আচমকা অভিষেককে দেখে অনেকে চমকে যান। আর বিধানসভায় পৌঁছতেই বুদ্ধবাবুর দেহের সামনে এসে দাঁড়ান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দৃশ্য দেখে অনেকে গুনগুন করতে থাকেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসে নিশ্চুপ ছিলেন শাসকদলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। বুদ্ধবাবুর পরিবার এবং দলের সহযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বিরোধী দলনেতা। আর সকলকে শক্ত থাকার বার্তা দিয়েছেন বলে জানান শুভেন্দু অধিকারী। ভাগ করে নিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর প্রথমবার কথা বলার স্মৃতি। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে হাজির ছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল–বিজেপির বিধায়করা। বুদ্ধবাবুর মরদেহে মাল্যদানের পর মীরা ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথা বলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডিজি, পুলিশ কমিশনার। পিন পড়ার নীরবতা ছিল তখন বিধানসভায়। তখনই নমস্কার করে ফুলের মালা দিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে শেষশ্রদ্ধা জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এভাবেই এক ফ্রেমে এলেন অনেকেই। শাসক–বিরোধী আজ মিশে একাকার হয়ে গেল বিধানসভা প্রাঙ্গণে। এখানেই বহু বছর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাটিয়ে গিয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রাজনৈতিক মতপার্থক্য, বিতর্ক থাকলেও আজ সব মিশে গেল শ্রদ্ধায়। আর তাই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিধানসভার বাইরে ভিড় জমান বহু মানুষ। সেই ভিড়ে ছিলেন বিধানসভার প্রাক্তন কর্মীরাও।