মহিলা চিকিত্সককে ধর্ষণ–খুনের ঘটনায় প্রতিবাদ চলছে আরজি কর হাসপাতাল চত্বরে। এই আবহেই আজ, রবিবার হাসপাতালে গেলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। যে সেমিনার হলে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে পৌঁছলেন তিনি। নগরপালের সঙ্গেই ঘটনাস্থলে এলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মুরলীধর শর্মা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ এবং সেমিনার হল পরিদর্শন করলেন নগরপাল। লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের কর্তাদের সঙ্গে ছিলেন মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হবে আন্দোলনকারীদের। আজ তাঁদের সঙ্গে দেখা করে এই কথা জানিয়েছেন নগরপাল। এদিকে রবিবার আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগেও কর্মবিরতির শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। দুদিন আগে জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি সব বিভাগেই কর্মবিরতির শুরু হয়েছিল। এবার রবিবার জরুরি পরিষেবাতেও কর্মবিরতির ডাক দিলেন তাঁরা। এই আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের দাবি না মানা পর্যন্ত তাঁরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন। আজ পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখার পর কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মুরলীধর শর্মা বলেন, ‘এই ঘটনার পিছনে আর কেউ আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি তদন্তে কিছু পাওয়া যায়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হোয়াটসঅ্য়াপ, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই ভিত্তিহীন পোস্ট করছেন। দয়া করে তাতে কান দেবেন না।’ অন্যদিকে আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিত্সককে ধর্ষণ–খুনের ঘটনায় এবার ‘জেনারেল বডি’র মিটিং শুরু হবে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শুরু হবে সেটি। স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে পাঠরত চিকিত্সক পড়ুয়াদের জেনারেল বডির বৈঠক হবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। তার উপর আরজি কর হাসপাতালের রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন এই ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে। তাঁদের সন্দেহ, এই ঘটনায় একাধিক অপরাধী জড়িত। শুধু সঞ্জয়ের গ্রেফতারে সন্তুষ্ট নন চিকিৎসকরা। এই ঘটনার জেরে পূর্বতন সুপারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরজি কর হাসপাতালের নয়া সুপার হলেন বুলবুল মুখোপাধ্য়ায়। এই হাসপাতালের ডিন ছিলেন তিনি। এছাড়া এই ঘটনার পর ওই তলায় থাকা নিরাপত্তার দায়িত্বে দু’জন নিরাপত্তারক্ষীকে সাসপেন্ড করেছে আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর কড়া শাস্তির ব্যবস্থা হবে। মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তির পক্ষে মন্তব্য করেছেন। পুলিশকর্মীদের উদ্দেশে পুলিশ কমিশনারের মন্তব্য, ‘আরজি কর হাসপাতালের মর্মান্তিক ও অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের মহিলাদের সুরক্ষার প্রতি অতিরিক্ত সতর্ক হওয়া দরকার। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধে জিরো টলারেন্সের নীতি নিতে হবে।’