আরজি কর কাণ্ডে ভুয়ো পোস্ট করতে বারণ করা হয়েছিল কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে। পাশাপাশি এমন কোনও উস্কানিমূলক পোস্ট করতেও বারণ করা হয়, যা থেকে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে। তবে বিগত কয়েকদিন ধরেই আরজি করে চিকিৎসক খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঝড় উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকজন ট্রেনি চিকিৎসকের নাম এবং ছবি ঘোরাফেরা করছে। এদিকে নির্যাতিতার পক্ষে সওয়াল করা অনেকেই সেই মৃত চিকিৎসকের নাম এবং ছবি পোস্ট করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা কি না আইনত অপরাধ। এই আবহে এবার ১৫ জন ইনফ্লুয়েন্সারকে লালবাজারে তলব করল কলকাতা পুলিশ। এর আগে আরজি কর কাণ্ডে গুজবে কান দিতে বারণ করে গতকাল এক দীর্ঘ পোস্ট করে কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে সেই পোস্টে লেখা হয়, ‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে যে চিকিৎসক তরুণীর মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে, এই কঠিন সময়ে আমরা সর্বান্তঃকরণে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে আছি। এই ঘটনায় মানুষের ক্ষোভ, শোক, রাগ অত্যন্ত স্বাভাবিক। বিশেষ করে চিকিৎসক সমাজের এবং মৃতার পরিজনদের। এই ক্ষোভ-শোক-ক্রোধের নতমস্তক শরিক আমরাও। এই যন্ত্রণা বর্ণনাতীত।’ পুলিশের তফ থেকে দাবি করা হয়, ‘আমাদের তদন্ত চলছে আন্তরিক সততা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে। এই নারকীয় ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে আমরা একজনকে গ্রেফতার করেছি তথ্যপ্রমাণসহ। আরও কেউ ঘটনায় জড়িত ছিল কী না, সে বিষয়েও তদন্ত চলছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে। মৃতার পরিবারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে, এবং তদন্তের প্রতিটি পদক্ষেপ তাঁদের জানাচ্ছি আমরা।’ এরপর পুলিশের পোস্টে বলা হয়, ‘একটি কথা সবিনয়ে বলার। সোশ্যাল মিডিয়ায়, বিশেষত ফেসবুকে ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন অসত্য, অনুমাননির্ভর এবং বিভ্রান্তিকর তত্ত্ব ছড়িয়ে দিচ্ছেন নেটিজেনদের একাংশ। আমাদের আন্তরিক অনুরোধ, না-যাচাই-করা এই ধরণের তত্ত্ব, তথ্য বা গুজবে কান দেবেন না। এতে তদন্তের ক্ষতি হয়, ন্যায়ের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়, এবং সর্বোপরি শোকগ্রস্ত পরিবারটি আরও বেশি করে যন্ত্রণাদগ্ধ হয়। আবার বলি, সততা, আন্তরিকতা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত চলছে। কাল্পনিক তত্ত্ব এবং গুজব ছড়ালে সেই তদন্তেরই গতি ব্যাহত হয়। বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীদের বলি, আমরা বুঝতে পারছি আপনাদের শোক, সমর্থন করছি আপনাদের ন্যায়বিচারের দাবি। আপনাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। বিশ্বাস রাখুন, যত দ্রুত সম্ভব ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। রাজ্যের মানুষকে জানাই, আমাদের তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে। কলকাতা পুলিশ যথাসাধ্য দ্রুততায় চার্জশিট জমা করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে। ন্যায়বিচার হবেই। দ্রুতই হবে। না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না। ভরসা রাখুন।’