জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির বলি হতে হল এক দরিদ্র তরুণকে। হিঙ্গলগঞ্জের কাঁটাতলার বাসিন্দা তোফাজ্জেল গাজি নামে ওই যুবক বাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন ছ’দিন আগে। প্রথমে তাঁকে টাকি, পরে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে নিয়ে পিজির ট্রমা কেয়ারে ভর্তির জন্য আনা হয়। কর্মবিরতি চলায় সেখানে চিকিৎসক সংখ্যা কম। ফলে তোফাজ্জেলকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এবার তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেও কর্মবিরতি। ফলে একই অবস্থা। অগত্যা তোফাজ্জেলের বাবা ছেলেকে বাঁচাতে নিউটাউনের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। ততক্ষণে ছেলে কোমায় চলে গিয়েছেন। এদিকে নার্সিংহোমে দু’দিনে বিল উঠে যায় এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা। তোফাজ্জেলের বাবা ইটভাটার শ্রমিক। বিলের এই পরিমাণ টাকা তাঁদের কাছে কম নয়। এদিকে ছেলের অবস্থার কোনও উন্নতি হয় না। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, বিশেষ কিছু করার নেই। কম ব্যয়বহুল কোনও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে তাঁকে সরিয়ে নেওয়াই ভালো। তখন তোফাজ্জেলকে কদম্বগাছির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করায় পরিবার। সেখানে ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, ব্রেন ডেথ হয়ে গিয়েছে তোফাজ্জেলের। ভেন্টিলেশন খুলে দিলেই মৃত্যু হবে। পরিবারের হাতে সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেওয়া হয়। সোমবার তরুণকে নিয়ে বাড়ির দিকে যাওয়ার পথে মৃত্যু ঘটে তাঁর। এই ঘটনার আগাগোড়া সাক্ষী ছিলেন রুবেল গাজি। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেলের রাজ্য সভাপতি। রুবেলবাবু বলেন, ‘গরিব ছেলেটি প্রথমে চিকিৎসা পেলে হয়ত বেঁচে যেত। সেই কারণে অনেক আশা করে ওকে পিজির ট্রমা কেয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে কর্মবিরতির কারণে সেখানে চিকিৎসার সুযোগ পেল না। আন্দোলনের পক্ষে আছি আমরা। তবে কর্মবিরতির জেরে এরকম দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।’ বেসরকারিতে চিকিৎসার খরচ যাতে স্বাস্থ্যসাথীর মাধ্যমে হয়, সেই প্রচেষ্টাই চলছে বলে বক্তব্য সঙ্গীদের।