কলকাতা জেলা

নারী-অপরাধের তদন্তে ১৮ দফা কড়া নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য পুলিশ

আর জি কর হাসপাতাল কাণ্ডে সুপ্রিমকোর্টে প্রশ্ন মুখে পুলিশের ভূমিকা। তদন্ত পদ্ধতি নিয়ে বার বার ভর্ৎসিত হতে হয়েছে তাদের। এমন পরিস্থিতিতে ১৮ দফা কড়া নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য পুলিশ। মহিলা শিশু ও মহিলা সংক্রান্ত কোনও অপরাধ ঘটলে কী কী করতে হবে, তা বিস্তারিত বলা হয়েছে এই নির্দেশিকায়। আর জি কর কাণ্ডের পরই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য প্রশাসন। পুলিশ কমিশনারেটগুলির জন্য নির্দেশিকা জারি করল প্রশাসন। সেই সঙ্গে কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশকে ফেক নিউজ এড়াতে সশ্যাল মিডিয়ার ওপর সর্বক্ষন নজরদারি চালাতে হবে। ফেক নিউজ বন্ধ করতে অফিশিয়ালি সঠিক তথ্য দিয়ে পালটা পোস্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর বাইরেও জোনাল এডিজি-আইজি পদ মর্যাদার অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সর্ব স্তরের পুলিশ কর্মীদের এ ধরনের বিষয় নিয়ে সচেতন করতে।

১) আইন মেনে দ্রুত ব্যবস্থা। সহানুভূতিপূর্ণ আচরণ করতে হবে।
২) যত দ্রুত সম্ভব ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলতে হবে। ‘পুলিশ লাইন-ডু নট ক্রস’ টেপ দিয়ে ঘিরে এলাকা সংরক্ষিত করে রাখতে হবে।
৩) বিশদে ঘটনাস্থলের ভিডিওগ্রাফি করতে হবে। ইনকোয়েস্টেরও ভিডিও করতে হবে। তা সংরক্ষিত রাখতে হবে যাতে পরে প্রয়োজন ব্যবহার করা যায়।
৪) দ্রুত ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক দল ও স্নিফার ডগ পাঠাতে হবে। ঘটনাস্থল থেকে সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করার সময় তদন্তকারী আধিকারিকের ঘড়ি বা মোবাইলের সময় দেখে সঠিক তারিখ, সময় লিখে রাখতে হবে।
৫) নিশ্চিতভাবে না জানলে মৃত্যুর কারণ মৃতা বা নির্যাতিতার আত্মীয়দের জানানো যাবে না।
৬) থানার ওসি বা আইসিদের নিরন্তর মৃতা বা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। মানবিকভাবে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তবে গোপনীয়তা বজায় রাখার দিকেও নজর রাখা আবিশ্যিক।
৭) ময়নাতদন্তের সময় ম্যাজিস্ট্রেট ও পরিবারের কোনও সদস্যের উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক। পুরো প্রক্রিয়ায় ভিডিওগ্রাফি করে রাখতে হবে। ভিসেরা, ভ্যাজাইনাল সোয়ব যত দ্রুত সম্ভব ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠাতে হবে।
৮) দ্রুত পরিবারকে দিয়ে এফআইআর দায়ের করাতে হবে। তাঁদের না পাওয়া গেলে স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর করতে হবে।
৯) অভিযুক্তকে চিহ্নিতকরণ, গ্রেপ্তারিতে টিম তৈরি, অন্যান্য প্রমাণ সংগ্রহ এবং অপরাধের পুনর্নির্মাণে দেরি করা চলবে না।
১০) সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহে রাখতে হবে।
১১) সাক্ষীদের বয়ান ও ঘটনাস্থল থেকে সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করার ভিডিও করতে হবে।
১২) ঘটনার ফলে আইনশৃঙ্খলার কী পরিস্থিতি হবে, তা আগেভাগে আঁচ করতে হবে। পরিস্থিতি জটিল হলে তা সামলানোর সময় বডি ক্যামেরা ব্যবহার করতে হবে।
১৩) যতটা জানা যাবে সংবাদমাধ্যমকে ঠিক ততটাই জানাতে হবে। এধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে প্রতিদিন উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা সংবাদিক সম্মেলন করবেন। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ হলে মহিলা অফিসার সাংবাদিক সম্মেলন করবেন।
১৪) সংবাদমাধ্যমে তথ্য ফাঁস করা চলবে না। গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে।
১৫) সোশাল মিডিয়ায় কী খবর ছড়াচ্ছে তার দিকে নজর রাখবে একটি টিম। গুজব ছড়ালে বা উসকানি দিলে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৬) গুজব থামাতে ফ্যাক্ট চেক করা হবে। পাশাপাশি প্রকৃত তথ্য সোশাল মিডিয়ায় তুলে ধরা হবে।
১৭) উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নিচুতলার পুলিশকর্মীদের সতর্ক করতে হবে।
১৮) আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্থানীয় সূত্রের খবরের উপর ভরসা করতে হবে।