রবিবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত কৌশিকী অমাবস্যা। কৌশিকী অমাবস্যার তিথি শুরু হতেই তারাপীঠে ভক্তের ঢল। তারাপীঠে এই তিথিতেই শ্বেতশিমুল বৃক্ষের নীচে সাধনা করে মা তারার দর্শন পেয়ে সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামদেব। সেই থেকেই কৌশিকী অমাবস্যা পালিত হয়ে আসছে তারাপীঠে। এই দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তারাপীঠের মহাশ্মশানে তন্ত্র সাধনা করতে আসেন বহু তন্ত্রসাধক। মহাশ্মশানে জ্বলতে থাকে হাজার হাজার হোমকুণ্ড। কথিত আছে, বিশেষ এই দিনে তারাপীঠ মহাশ্মশান সংলগ্ন নদীতে স্নান করে মা তারাকে পুজো দিলে পুণ্য লাভ হয়। অশুভ শক্তিকেও বিনাশ করা যায়। পাশাপাশি তন্ত্রসাধনার ক্ষেত্রেও কৌশিকী অমাবস্যার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তন্ত্র সাধকদের অনেকেরই দাবি, এই তিথির এক বিশেষ মুহূর্তে স্বর্গ ও নরকের দ্বার কিছুক্ষণের জন্য খুলে হয়। সেই সময় সাধক নিজেদের ইচ্ছামতো ধনাত্মক অথবা ঋণাত্মক শক্তি নিজেদের সাধনার মধ্যে চালিত করে সিদ্ধি লাভ করতে পারেন। ইতিমধ্যেই কৌশিকী অমাবস্যার পুন্য তিথি শুরু হয়ে গিয়েছে। অমাবস্যা স্থায়ী হবে আগামী মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত। কৌশিকী আমাবস্যার নিশি বা ব্রত পালন করা হবে আজ, সোমবার। ইতিমধ্যেই প্রচুর ভক্তরা ভিড় জমিয়েছেন তারাপীঠ। অন্যদিকে, এদিন সকালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে পুজো দেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার তথা টিআরডিএ চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিশেষ তিথিতে পুণ্যার্থীদের সম্ভাব্য ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পূর্ব রেলওয়ের হাওড়া ডিভিশন সোমবার, মঙ্গলবার এবং বুধবার হাওড়া-রামপুরহাট এবং রামপুরহাট-হাওড়ার জন্য বিশেষ ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা করেছে। তন্ত্র মতে, কৌশিকী অমাবস্যার রাতকে ‘তারা রাত্রি’ বলা হয়। এক বিশেষ মুহূর্তে নাকি স্বর্গ ও নরকের দরজা মুহূর্তের জন্য খোলে এবং বিশ্বাস যে, সাধক নিজের ইচ্ছে মতো শক্তিসাধনার মধ্যে দিয়ে এদিন সিদ্ধিলাভ করতে পারেন। সাধক বামাক্ষ্যাপার অন্যতম সিদ্ধপীঠ এই তারাপীঠ।অনলাইনে পুজো দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতারণা চক্র রুখতে উদ্যোগী হলো তারাপীঠ মন্দির কমিটি৷ তারা জানিয়েছে, অনলাইন পুজোর কোনও ব্যবস্থাই কমিটির তরফে রাখা হয়নি। পাশাপাশি, পুজো দেওয়ার ভিড় সামাল দিতে ও নিরাপত্তার খাতিরে একাধিক পদক্ষেপ করেছে বীরভূম পুলিশ। পাশাপাশি, কৌশিকী অমবস্যার জন্য নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে মন্দির চত্বর ও সংলগ্ন এলাকা। রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে বীরভূমের পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় জানান, নিরাপত্তায় থাকছেন ৩০০ জন অফিসার সহ এক হাজার পুলিশকর্মী ও ১,৭০০ সিভিক ভলান্টিয়ার। এ বাদে দু’শো সিসিটিভি ক্যামেরা, ৩৭টি ড্রপ গেট, ১০টি ওয়াচ টাওয়ার, ১৩টি এন্ট্রি প্যাট্রলিং টিম ও কুইক রেসপন্স টিম ভক্তদের সুরক্ষায় নজর রাখবে।