সর্ষের মধ্যে ভূত…। যে সংস্থার কাজ সরকারের আর্থিক অনিয়ম ধরা, সেই ক্যাগের (কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল) অন্দরেই উঠল অনিয়মের অভিযোগ। দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে, বন্দে ভারত তৈরির ক্ষেত্রে দুর্নীতির ইঙ্গিত তোলা ক্যাগের বিরদ্ধেই এবার প্রায় ৫০ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ। যা ঘিরে উত্তাল সংস্থার সদর দপ্তর পকেট-৯ নয়াদিল্লির দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গ। স্রেফ আর্থিক নয়ছয়ই নয়- শ্লীলতাহানি, ঘুষ, পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মতো ১০টি অভিযোগ সামনে এসেছে। কেন্দ্রীয় অডিট সংস্থার উচ্চ পদাধিকারী আর অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন অফিসারের বিরুদ্ধে যা নিয়ে সরব সংস্থারই জুনিয়র কর্মীরা। আরও অভিযোগ, গত চার বছর ধরে চলতে থাকা একের পর এক এহেন অনিয়মের পরও চুপ সংস্থার শীর্ষকর্তারা। এমনকী, নাকের ডগায় দিনের পর দিন দুর্নীতির কথা জানার পর চুপ সরকারও। গোটা ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে ক্যাগের অন্দরমহলে। সূত্রে খবর, গত ২১ আগস্ট সদর দপ্তরের নয়জন অতিরিক্ত ডেপুটি ক্যাগকে একটি ই-মেল পাঠিয়েছেন জুনিয়র অফিসাররা। তাতে একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। প্রথম বিস্ফোরণ শ্লীলতাহানি নিয়ে। জানানো হয়, স্রেফ ক্যাগের বাহাদুর শাহ জাফর মার্গের অফিসার্স গেস্ট হাউসই নয়, পুনেয় ভারত-বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ক্রিকেট ম্যাচে দপ্তরের মহিলা কর্মীদের নিয়ে গিয়েও শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। এমনকী গত জানুয়ারিতে মরিশাসে ইন্ডিয়ান মিশনের অডিটের কাজে গিয়েও চলে দুষ্কর্ম। অভিযোগের আঙুল ডিরেক্টর স্তরের এক অফিসার এবং তাঁর সঙ্গে তিন প্রাক্তনের বিরুদ্ধে। সঙ্গে রয়েছে ‘কুকাজে’ সাহায্য করা আরও অনেকে। দ্বিতীয় অভিযোগ, ঘুষ। জুনিয়রদের ই-মেলে জ্বলজ্বল করছে, ফিল্ড অফিসারের চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রেও ২১ জনের থেকে ১৬ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। আর এই ‘ডিল’ হয়েছে সদর দপ্তরের দু’ নম্বর গেটের বিপরীতে চায়ের দোকানে। এখানেই শেষ নয়। বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে কেনা ৩৪টি চালু এলইডি টিভি ঘনিষ্ঠদের বিক্রি করা হয়েছে জলের দরে। পাশাপাশি, ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য কেনা হয়েছে এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকার টিভি। অভিযোগ, ক্যাগ রিক্রেয়শন ক্লাবের বরাদ্দ বার্ষিক দেড় কোটি টাকাও বছর বছর অন্য কাজে অপচয় হয়েছে। আর পছন্দের কন্ট্রাক্টরকে কাজের বরাত পাইয়ে দিয়ে ‘কাটমানি’ পকেটে ঢুকিয়েছেন অভিযুক্তরা। ফলে অপচয় হয়েছে সরকারি অর্থ।