ফের এক ভয়াবহ নারী নিগ্রহের সাক্ষী থাকল যোগী রাজ্য। অসুস্থ স্বামীকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে শ্লীলতাহানির শিকার স্ত্রী। শেষপর্যন্ত মহিলার অসুস্থ স্বামী হরিশের অক্সিজেন মাস্ক খুলে তাঁকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত অ্যাম্বুলেন্স চালক ও তার শাগরেদ। পরে গোরক্ষপুর মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয় হরিশের। উত্তরপ্রদেশের সিদ্ধার্থনগরের ৩০ আগস্ট রাতের এই ঘটনায় শিউরে উঠেছেন অনেকেই। কিন্তু, এখনও সেই বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেনি যোগীর পুলিশ। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন বাস্তি মেডিক্যাল কলেজে হরিশ চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিন্তু, অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে লখনউ মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। কিন্তু, সেখানে বেড খালি না থাকায় ওই মহিলা স্বামীকে ভর্তি করেন ইন্দিরা নগরের ইমপিরিয়া নিউরোসায়েন্স মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে। কিন্তু, সেখানে খরচ অত্যন্ত বেশি হওয়ায় দু’দিন পর তিনি স্বামীকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তখনই একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করেন। বংশী কোতয়ালির গনহাতালের ওই মহিলা সঙ্গে নেন তাঁর ভাই অনুপকে। গ্রামে ফেরার সময়ে চালক মহিলাকে সামনের সিটে তার পাশে বসতে বলেন। এক্ষেত্রে তার যুক্তি ছিল, সামনেই পুলিশের চেক পোস্ট রয়েছে। উনি সামনে বসলে সুবিধা হবে। তাই তিনি রাজি হয়ে যান। এরপর চলন্ত অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই চালক ও তার শাগরেদ মহিলার শ্লীলতাহানি করতে থাকে। বাধা দিয়ে, চিৎকার করেও কোনও লাভ হয়নি। ভাই অনুপ পিছনে থাকায় প্রথমে কিছু বুঝতে পারেননি। শেষপর্যন্ত, প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পথ পেরনোর পর বাস্তির কাছে একটা ফাঁকা জায়গায় অ্যাম্বুলেন্সটিকে থামানো হয়। সেখানে অসুস্থ হরিশকে রাস্তায় ফেলে তারা পালিয়ে যায়। তাতে গুরুতর চোট পান হরিশ। অসহায় মহিলা নিরুপায় হয়ে ফোন করেন ১১২ নম্বরে। পুলিস এসে বিকল্প অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে। হরিশকে নিয়ে যাওয়া হয় বাস্তি মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু, অবস্থার অবনতি হওয়ায় হরিশকে সেখান থেকে পাঠানো হয় গোরক্ষপুর মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় হরিশের মৃত্যু হয়। ওই মহিলার অভিযোগ, বাস্তির পুলিশ অ্যাম্বুলেন্সের কর্মীদের ধরার কোনও চেষ্টাই করেনি। অনুপের দাবি, অ্যাম্বুলেন্সের এক কর্মীকে আটক করেও পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে। স্বামীর শেষকৃত্যের পর লখনউয়ের গাজিপুর থানায় ওই মহিলা অভিযোগ দায়ের করেছেন। ন্যায়বিচার মিলবে কি না, তা সময়ই বলবে।