রাজ্যে আরও একটি ধর্ষণের অভিযোগ সামনে এসেছে। এবার অভিযোগ উঠেছে এক স্বঘোষিত বাবার বিরুদ্ধে, যিনি ‘ইউটিউবার বাবা’ নামেও পরিচিত। এনিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তারপরেই বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। বিচারের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই তরুণী। একইসঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে তিনি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন। মামলায় পুলিশের তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলাটি ওঠে বিচারপতি হিরণময় ভট্টাচার্যের এজলাসে। তরণীর অভিযোগ, ছোট থেকেই তিনি আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী। তাই সমাজ মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন ধর্মগুরু এবং সাধু-সন্তদের ভিডিয়ো দেখতে ভালোবাসেন। সেরকমই অভিযুক্ত বাবার ভিডিয়ো তিনি দেখেছিলেন ইউটিউবে। তার বক্তৃতা শুনে ভালো লেগেছিল তরুণীর। এরপরে তিনি বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন বাবা তাকে সশরীরে আশ্রমে হাজির হতে বলেছিলেন। পরে ২০২৩ সালের মে মাসে বীরভূমের সিউড়ির রাজনগরে ওই গুরুর ডেরায় মাকে সঙ্গে নিয়ে যান তরুণী। তবে সেই সময় বাবার স্ত্রী তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছিলেন। পরে বাড়ি ফিরে এসে তারা বাবার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এদিকে, বাবা তরুণীর সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তিনি জানান, তাকে আশ্রমে রাখতে চান, তার বাকি জীবনের দায়িত্ব নিতে চান। অভিযোগ, এরপর ওই তরুণীকে বাবা মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় ওই বছরেরই নিজের ডেরায় ডাকেন। বলেছিলেন দীক্ষা দেবেন। তখন গুরুর ওপর বিশ্বাস করে তরুণী সেখানে যান। অভিযোগ, এরপর ওই তরুণীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন গুরু। একপ্রকার এরজন্য তিনি তরুণীকে বাধ্য করেন। এর পরে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের একটি জায়গায় তরুণীর সঙ্গে গুরু সহবাস করেন বলে অভিযোগ। তবে তারপরই ঘটে বিপত্তি। তরুণীর অভিযোগ, সহবাসের পরে গুরু তার সঙ্গে লাগাতার খারাপ আচরণ করতে থাকেন। তাতে তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রায় ২১ দিন ধরে সেই সময় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। এরপর তরুণী বাবার বিরুদ্ধে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তরুণী। কিন্তু, পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি। উল্টে বিষয়টি মিটমাট করে নিতে বলে। তরুণীর দাবি, অভিযুক্ত আসলে উত্তরপ্রদেশের বৃন্দাবনের বাসিন্দা। তিনি আরও একাধিক তরুণীর সঙ্গে এভাবে যৌনমিলন করে গর্ভপাতে বাধ্য করেন। বৃন্দাবনেও তার নামে পকসো আইনে মামলা হয়েছে। এদিন মামলায় কেন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তিনি পুলিশকে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন। দুর্গাপুজোর পরে এই মামলার শুনানি হবে।