বিনোদন

‘প্রিয় বন্ধু, তোমাকে বিদায়’, শিল্পপতি রতন টাটাকে শোক জ্ঞাপন প্রবীণ অভিনেত্রী সিমি গ্রেওয়ালের 

দেশের মানুষের কাছে তিনি শিল্পপতি হিসাবে নন, বরং আশা-ভরসার মানুষ ছিলেন। যেকোনও বিপদ, সঙ্কটে সর্বদা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। সেই কারণেই টাটা গোষ্ঠীর কর্ণধার নয়, বরং আমজনতার ঘরের মানুষ হয়ে উঠেছিলেন রতন টাটা। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। মহারাষ্ট্রে আজ শোক দিবসের ঘোষণা করা হয়েছে। শিল্পজগত থেকে বলিউড- সকলেই শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রতন টাটাকে। বাদ যাননি এক বিশেষ অভিনেত্রীও, যার নাম বারবার জড়িয়েছিল রতন টাটার সঙ্গে।এক্স হ্যান্ডেলে রতন টাকাকে নিয়ে শোক জ্ঞাপন করেছেন বলিউডের প্রবীণ অভিনেত্রী সিমি গ্রেওয়াল। তিনি লেখেন ‘সবাই বলছে তুমি চলে গিয়েছো, তোমার এই চলে যাওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না…’। অনেকেই জানেন না যে বলিউডের সঙ্গেও নিবিড় সংযোগ ছিল রতন টাটার। তিনি একটি সিনেমা প্রযোজনাও করেছিলেন। রতন টাটার যৌবনে তাঁর চেহারা, ব্যক্তিত্ব দেখে প্রেমে পড়েছিলেন বহু অভিনেত্রী। তবে তাঁর মন কেড়েছিলেন এক অভিনেত্রী। এমনকী, তাঁকে বিয়েও করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত অভিনেত্রীর বাড়ির লোকের অমতে সেই সম্পর্ক পরিণতি পায়নি। আজীবন অবিবাহিতই রয়ে গিয়েছেন রতন টাটা। এই অভিনেত্রী আর কেউ নন, সিমি গারেওয়াল। অভিনয়ের পাশাপাশি নানা জনপ্রিয় শো সঞ্চালনা করেছেন তিনি।  সিমির প্রেমেই একসময়ে হাবুডুবু খেয়েছিলেন রতন টাটা, এমনটাই শোনা যায়। সালটা তখন ১৯৭০। একাধিক জায়গা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রতন টাটার পাশে দেখা গিয়েছিল সিমি গারেওয়ালকে। যদিও তারা কখনও এই সম্পর্কের কথা স্বীকার করেননি। ভাল বন্ধু হিসাবেই পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর আরও উক্তি, ‘আমার খুবই যন্ত্রণা হচ্ছে। প্রিয় বন্ধু, তোমাকে বিদায়।’ গুঞ্জন শোনা যায়, এই সিমির সঙ্গেই একদা প্রেমের মধুর সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন রতন টাটা। সেই গুঞ্জন যে নিছক রটনা নয়, তা যে সত্যি, স্বীকার করে নিয়েছিলেন সিমি নিজেই। দুনিয়াবাসীকে জানিয়েছিলেন, খুব অল্প সময়ের জন্য তাঁর সঙ্গে রতন টাটার ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল (‘ডেট’ করেছিলেন রতন টাটাকে সিমিকে)। সম্পর্কে ভেঙে গেলেও, আজীবন বন্ধুত্ব পালন করেছেন দু’জনেই। ২০১১ সালের এক পুরনো সাক্ষাৎকারে সিমিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘রতন টাটা আপনার কে? আবেগে ভেসে সলজ্জ জবাব দিয়েছিলেন সিমি, ‘আমাদের অনেক পুরনো দোস্তি। অনেক আগে থেকেই আমাদের পথচলা। তিনি খুঁতখুঁতে মানুষ। দুর্দান্ত রসিক স্বভাবের। খুবই নমনীয় এবং এক আদর্শ পুরুষ। এতবড় সাম্রাজ্যের সম্রাট হয়েও বিপুল ধনরাশি মানুষটাকে পাল্টাতে পারেনি। মানুষটা আসলে মাটি দিয়ে গড়া।’ ‘প্রেম’ অতীত হলেও, সিমি-রতনের বন্ধুত্ব ভাঙেনি। সিমির জনপ্রিয় টেলিভিশন শো-এ এসে তাঁর নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলেন রতন। জানিয়েছিলেন, কেন আজীবন অবিবাহিতই থেকে গেলেন। রতনের সরল স্বীকারোক্তি ছিল, ‘অনেকবার বিয়ে করতে গিয়েও হল না। অবিবাহিতই থেকে গেলাম। স্ত্রী, সন্তানের অভাব বোধ করি। একাও লাগে। কিন্তু সময় আমার সহায় ছিল না। কাজেই ডুবে থেকেছিলাম।’ মুম্বইয়ে সিমির প্রথম বন্ধু ছিলেন রতন টাটা। বিদেশ থেকে দু’জনেই ফিরে ছিলেন স্বপ্ননগরীতে। অতীতে সিমির ব্যাখ্যায়, ‘অতগুলো বছরেও আমার চেনা রতন একফোঁটাও পাল্টাননি। এখনও মানুষটা লাজুক প্রকৃতির। কাজের জায়গায় অপ্রতিরোধ্য। দুর্দান্ত দূরদৃষ্টির অধিকারী।’