কলকাতা হাইকোর্টে জোর ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার ৷ 163 ধারা জারি করা নিয়ে লালবাজারের নোটিশ খারিজ করে দিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের দ্রোহের কার্নিভালে অনুমতি দিয়েছে আদালত ৷ আজ একইসঙ্গে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল থাকায়, রানি রাসমনি অ্যাভেনিউ ও রেড রোডের মাঝখানে একটা ব্যারিকেড করে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রবি কিষান কাপুর । শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি করায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট । বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এর আগে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট একাধিক নির্দেশে উল্লেখ করেছে, শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল ও কর্মসূচি করা যাবে । কলকাতা পুলিশের তরফে দ্রোহের কার্নিভালের আগে বিভিন্ন জায়গায় 163 ধারা জারির নোটিশ দেওয়া হয়েছিল ৷ সেই নোটিশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের করা মামলার শুনানিতে এদিন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 14 অক্টোবর রাতে পুলিশের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ধর্মতলার বিভিন্ন জায়গায় 163 ধারা জারি করা হয়েছে । এর কারণ ব্যাখ্যা করে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, একমাস আগে পুজোর কার্নিভালের কথা জানানো হয়েছিল । আর এখন 13 অক্টোবর ডাক্তাররা জানাচ্ছেন, তাঁরা মানববন্ধন কর্মসূচি করতে চান । এজি-র এই বক্তব্য শুনে বিচারপতির প্রশ্ন, “রাজ্য এঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না ?” বিচারপতির কাছে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আবেদন জানান, “রানি রাসমণিতে শান্তিপূর্ণ ভাবে কর্মসূচি করতে দেওয়া হোক । কার্নিভালের জায়গা থেকে এটা অনেকটাই দূরে । যাতে কোনও কর্মসূচি না-করা যায়, তার জন্যই পুলিশ ধর্মতলার চারদিকে ব্যারিকেড করে ঘিরে দিয়েছে ।”এজি কিশোর দত্ত তখন বলেন, দেশ বিদেশের অতিথিরা আসবেন পুজোর কার্নিভালে ৷ সেই জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল যাতে তাঁরা এই কর্মসূচি না করেন । তবে বিচারপতির প্রশ্ন, “একটা যুক্তিসঙ্গত কারণ বলুন, যার জন্য এই কর্মসূচি করা যাবে না । জুনিয়র ডাক্তাররা শান্তিপূর্ণ ভাবে এই কর্মসূচি করলে আপত্তি কীসের ?”জবাবে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, “মিটিং মিছিল করার অধিকার রয়েছে মানেই সব জায়গায় সব সময় তা করা যায় না । আকাশ ভেঙে পড়বে না, যদি এটা অন্য কোনও দিন করা হয় । সুপ্রিম কোর্ট শান্তিপূর্ণ মিছিল করতে অনুমতি দিয়েছে । কিন্তু এখানে কাকতালীয় ভাবে কার্নিভাল বেলা 4.30-এ । ডাক্তাররা বেলা চারটের সময় তাঁদের কর্মসূচি করতে চেয়েছেন । আগামিকাল বা পরশু যে কোনও দিন করতে পারেন । লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি চলছে । তাঁদের আটকানো হয়নি ।”বিচারপতি এরপর রাজ্যের কাছে জানতে চান যে, “আপনারা এমন কোনও পরামর্শ কি দিতে চান, যেখানে শান্তিপূর্ণ ভাবে দুটি কর্মসূচিই হতে পারে ?” জবাবে কিশোর দত্ত বলেন, “বিসর্জন চলছে । উত্তর কলকাতার ঠাকুরের আজ ভাসান রয়েছে । বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিমা আসছে কার্নিভালে । এই পরিস্থিতিতে রানি রাসমণিতে কর্মসূচি করতে দিলে যানজটের সৃষ্টি হবে । আর একান্তই যদি তা করতে হয়, তাহলে জুনিয়র ডাক্তাররা রামলীলা পার্কে গিয়ে তাঁদের কর্মসূচি করতে পারেন ।” বিভিন্ন পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারপতি কলকাতা পুলিশের নোটিশ খারিজ করে দেন এবং জুনিয়র ডাক্তারদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অনুমতি দেন ৷ পাশাপাশি গতকালের নোটিশ অনুযায়ী কলকাতা পুলিশ যে সব জায়গায় ব্যারিকেড দিয়েছে, সেগুলি সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত ৷