দেশ

দীপোৎসবে অযোধ্যা রামমন্দিরে সাজ সাজ রব, জ্বলবে ২৫ লক্ষ প্রদীপ, চলবে লেজার শো, থাকছে একগুচ্ছ চমক

:দীপোৎসব উপলক্ষে সেজে উঠছে মন্দির শহর অযোধ্যা। দীপাবলির প্রাক্কালে বুধবারই অষ্টম মেগা দীপোৎসব অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেই কারণে ৩০ নভেম্বর সরযূ নদীর তীরে জ্বালানো হবে ২৫ লক্ষ প্রদীপ। আর গোটা শহর জুড়ে জ্বালানো হবে ৩৫ লক্ষ প্রদীপ। রাখা হয়েছে ৬১ হাজার লিটার সরষের তেল। রামজন্মভূমি মন্দিরকে আলোকিত করবে বিশেষ পরিবেশ-বান্ধব প্রদীপ। চলবে নজরকাড়া লেজার শো।  হবে ড্রোন শো। রঙবেরঙের লেজার রশ্মি কাড়বে দৃষ্টি। সকাল ১০টা থেকে দীপোৎসব শুরু হওয়ার কথা। ফলে সেখানকার ভলান্টিয়ার, সুপারভাইজার এবং ঘাট কো-অর্ডিনেটরদের মধ্যে ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো! প্রায় ২৫ লক্ষ প্রদীপে তেল ঢালা এবং সলতে পরানোর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে আবার সাকেত মহাবিদ্যালয় থেকে একটি শোভাযাত্রা শুরু হবে। যেখানে দেখা যাবে ১৮টি ট্যাবলো। এর মধ্যে তথ্য দফতরের ১১টি ট্যাবলো এবং পর্যটন দফতরের ৭টি ট্যাবলো থাকছে। যেখানে প্রতিফলিত হবে রামায়ণের দৃশ্য। ১১০০ মহিলা করবেন আরতি। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তোলাই যে লক্ষ্য। তাই আজ দীপোৎসবে হাজির থাকবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মোদিই বা পিছিয়ে থাকেন কেন। সঙ্ঘের হিন্দুত্বের জোর দেওয়ার বার্তা পেয়েই এদিন নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এবারের দীপাবলি ৫০০ বছরের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ।  কারণ ৫০০ বছর পর অবশেষে আবার প্রভূ শ্রীরাম নিজের মন্দিরে দীপাবলি পালন করবেন। আর আমরা সেই ঘটনার সাক্ষী হতে পেরে ধন্য হব। আলোর উৎসবের আয়োজনে পৌরাণিক অযোধ্যার ছবি হারিয়ে গিয়েছে। নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগে অযোধ্যার এখন নবরূপ। রামমন্দির যাওয়ার রামপথের দু ধারে জয়পুরের ধাঁচে একই রঙের নানা দোকান। বাতিস্তম্ভে রামতিলক। যদিও গত ২২ জানুয়ারি ঘটা করে রামমন্দির উদ্বোধন হলেও মন্দির এখনও অসম্পূর্ণ। ৬৭ একর জুড়ে তৈরি মূল মন্দির সহ পুরো পরিসর তৈরির কাজ চলছে। প্রবেশদ্বারের দুপাশের থামে এখনও পেনসিলে আঁকা সপ্তঘোড়ার সূর্যরথ, পৌরাণিক মূর্তি। পরে যা কেটে নকশা ফুটিয়ে তোলা হবে। তবুও প্রতিদিন লাখো লোকের ভিড় অযোধ্যায়। ভাস্কর অরুণ যোগিরাজের তৈরি অপূর্ব সুন্দর রামলালা মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর থেকে দর্শনার্থী ভক্তদের ভিড় থেমে নেই। সকালে সোনায় মোড়া মন্দিরের দরজা খোলার অপেক্ষা। মোবাইল, পার্স সহ ইলেকট্রনিক যাবতীয় জিনিসপত্র রেখে আসতে হয় দূরে। যেতে হয় খালি পায়ে। রামমন্দির উদ্বোধনের পর প্রথম দীপোৎসব। যা দেখতে আজ কয়েক লক্ষ মানুষের ভিড় হবে বলেই প্রশাসনের মত। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো বলছে, স্রেফ চলতি বছরের প্রথম ছ’মাসে গোটা উত্তরপ্রদেশে যেখানে ৩৩ কোটি পর্যটক এসেছেন। স্রেফ একা  অযোধ্যায় ১১ কোটি। যা ছাপিয়ে গিয়েছে বারাণসীকে। কাশী বিশ্বনাথ আর বারাণসীতে গিয়েছেন ৪ কোটি ৬১ লক্ষ। আগ্রার তাজমহলে পর্যটকের সংখ্যা মাত্র ৬৯ লক্ষ ৮০ হাজার। দিনে দিনে ভক্ত, পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে অযোধ্যায়। তা সে যতই মন্দির হোক না অসম্পূর্ণ।  আজ অবোধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ হাজার ভলান্টিয়ার জ্বালাবেন দ্বীপ। তারপর দীপোৎসবের বাকি সেলিব্রেশনে মালয়েশিয়া, মায়ানমার, থাইল্যাণ্ড, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়ার শিল্পীরা অভিনয় করবেন রামলীলার। পাঁচ হাজার পুলিস কর্মীর নজর থাকবে পুরো দীপোৎসবকে সুষ্ঠুভাবে পালনের। অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির পর থেকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা জিএসটি আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই। রামমন্দির দর্শনে সাধারণের আগ্রহও মেটাতেও কোনও খামতি রাখছে না ট্রাস্ট।