জামা মসজিদে সমীক্ষাকে কেন্দ্র করে অশান্ত উত্তরপ্রদেশের সম্ভল ৷ পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে মৃত ৪ জন ৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এলাকায় একাধিক কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করল জেলা প্রশাসন ৷ আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাইরের কেউ এই এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না বলে জানিয়ে দিল প্রশাসন ৷ বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। বন্ধ স্কুল-কলেজও। রবিবার সন্ধ্যায় সম্ভলের জেলাশাসক রাজেন্দ্র পেনসিয়া জানান, ভারতীয় ন্যায় সংহীতার আওতায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ৷ তিনি বলেন, “সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক আধিকারিকের অনুমতি ছাড়া কোনও বহিরাগত, সামাজিক সংগঠন কিংবা জনপ্রতিনিধি এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না ৷” এই নিয়ম অমান্য করলে ভারতীয় ন্যায় সংহীতার ২২৩ নম্বর ধারার অন্তর্গত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান জেলা শাসক ৷ রবিবার সন্ধ্যা থেকেই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে ৷ আদালতের নির্দেশ মেনে রবিবার সম্ভলের জামা মসজিদে দ্বিতীয় দফার সমীক্ষার জন্য পৌঁছয় একটি দল ৷ তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পুলিশ কর্মীরাও ৷ সেই সময় পুলিশের সঙ্গে বচসা শুরু হয় স্থানীয়দের ৷ সমীক্ষক ও পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা ৷ এরপর উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ ৷ পালটা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে উত্তেজিত জনতা ৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন এসপি কৃষ্ণ কুমার বিষ্ণোই ৷ উত্তেজিত জনতার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন ৷ কিন্তু, তারপরও পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ৷ ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী-সহ আহত হয় বেশ কয়েকজন ৷ মোরাদাবাদের ডিভিশনাল কমিশনার অঞ্জনিয়া কুমার সিং বলেন, “বিক্ষোভকারীদের তরফে গুলি চালানো হয় ৷ ঘটনায় ৪ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে ৷ এক পুলিশ আধিকারিকের পায়ে গুলির আঘাত লেগেছে এবং ১৫ থেকে ২০ জন পুলিশকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন ৷” তিনি আরও জানান, অশান্তির ঘটনায় ২ জন মহিলা-সহ ২১ জনকে আটক করা হয়েছে ৷ তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ অভিযোগ প্রমাণ হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইন (এনএসএ) অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে ৷ বেশ কিছুদিন আগে হিন্দু পক্ষের এক স্থানীয় আইনজীবী দাবি করেন, ১৫২৯ সালে মুঘল সম্রাট বাবরের সময় একটি মন্দির ভেঙে জামা মসজিদটি তৈরি করা হয়েছে ৷ তাঁর সেই দাবির প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা করেন আইনজীবী বিষ্ণু শঙ্কর জৈন ৷ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে তিনি আবেদন করেন, এলাকার একটি সমীক্ষা করা হোক ৷ এরপর মসজিদে সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ দেয় আদালত ৷ গত মঙ্গলবার প্রথম ধাপে একবার সমীক্ষা করতে যান সমীক্ষকরা ৷ কিন্তু, সেদিন কাজ সম্পূর্ণ না-হওয়ায় রবিবার সকালে ফের একবার সমীক্ষা করতে যায় সমীক্ষকের একটি দল ৷