সোশ্যাল মিডিয়া মারফত রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে কড়া চিঠি দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি। যে চিঠির প্রথমেই পার্থ লিখেছেন, ‘আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিঠি প্রকাশ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কিছু জানতে চেয়েছেন। তাই সোশ্যাল মিডিয়ার মারফতই আপনাকে চিঠি দেওয়া’। বর্ষশেষের শুভেচ্ছা বার্তা সহ পার্থ লিখেছেন, ‘২৫ ডিসেম্বর আপনি মুখ্যমন্ত্রীকে যে চিঠি লিখেছেন, তার প্রেক্ষিতে বিষয়গুলি সম্পর্কে আপনাকে জানাতে মুখ্যমন্ত্রী আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন। বিষয়গুলি হল, রাজ্য সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অনুষ্ঠান বাতিল এবং ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা। আপনাকে অবগত করা হয়েছে যে, যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান বাতিল হয়েছে সেসব অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ স্থির করা, অনুষ্ঠানসূচি তৈরি করা এবং তা বাতিল করা— সবটাই হয়েছে রাজ্যপালের তৈরি করা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালে তৈরি নিয়মকানুনকে ভিত্তি মেনে রাজ্য সরকার তাদের কাজকর্মে ও দায়িত্বপালনে হস্তক্ষেপ প্রায় করেই না’। শিক্ষামন্ত্রী লিখেছেন, ‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হবে, কেন্দ্রের প্রস্তাবিত এনআরসি, ক্যা এবং এনপিআর কার্যকর করার বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল। তাদের ক্ষোভও জানাচ্ছিল। ছাত্রছাত্রীরা ও এ রাজ্যের মানুষ এই সবকিছু প্রত্যাহারের দাবি করছে এবং পশ্চিমবঙ্গে তা কার্যকর করার তীব্র বিরোধিতা করছে’। পার্থ রাজ্যপালকে লিখেছেন, ‘আপনার ইচ্ছে অনুযায়ী আমরা সব সময় একসঙ্গে কাজ করতে তৈরি’। কিন্তু তারই পাশাপাশি মন্ত্রী লিখেছেন, ‘আপনার মনোভাব হতে হবে আন্তরিক। জোর করা চলবে না। রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের স্বার্থে কাজ হবে পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে’। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে সরকারের কাজকর্মের খতিয়ানও ওই চিঠির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ৬১টি স্কুল তৈরি হয়েছে। ৬৯টি মাধ্যমিক স্কুলে উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৬৫টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মিড–ডে মিলের জন্য ২৯১৪টি ডাইনিং হল তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া আরও কাজ হয়েছে। যা ওই তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক স্তরে কী, কী কাজ হয়েছে, তালিকায় তাও বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, ১৮টি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, ৫০টি নতুন কলেজ তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮টি হচ্ছে সরকারি অনুদানে ও ১০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। আরও ১১টি সরকারি অনুদানে বিশ্ববিদ্যালয় হবে। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও তৈরি করা হচ্ছে। ২০১৩ থেকে ৬ হাজারেরও বেশি সহকারী অধ্যাপক, ২৫০ জন অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হয়েছে। পাবলিক সার্ভিস কমিশন ও কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ করা হচ্ছে।