হক জাফর ইমামঃ ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে মদ বিক্রিতে রাশ টানতে চলেছে রাজ্য আবগারি দপ্তর। নতুন লাইসেন্সীদের অফশপের দোকান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে আবগারি দপ্তর। কিন্তু নতুন ভাবে পানশালার লাইসেন্সের অনুমোদন দেওয়া নিয়ে রাজ্যজুড়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে । তাঁদের অভিযোগ, জানুয়ারি থেকে (ফোর-কিউ) ক্যাটাগরিতে যারা নতুন লাইসেন্স পেয়েছেন তাদের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে আবগারি দপ্তর। লোকসভা নির্বাচনের জন্যই নাকি এই সিদ্ধান্ত । কিন্তু এরই মধ্যে (ফোর-আই) ক্যাটাগরিতে পানশালার লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে। সে ব্যাপারে কেন রাশ টানা হলো না । হঠাৎ করে নতুন ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার রাজ্য জুড়ে কয়েক’শ লাইসেন্সীদের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে একাংশ লাইসেন্সীরা উচ্চ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।আবগারি দপ্তরের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, লোকসভা ভোটের মুখে আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মোতাবেক মদ বিক্রিতে রাশ টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আবগারি দপ্তর। ২০১৯ সালের নির্বাচনের জন্য ফোর-কিউ ক্যাটাগরির নতুন লাইসেন্সীদের দোকান বন্ধ রাখতে হবে । এই সিদ্ধান্ত অবশ্য নির্বাচনকে ঘিরে সাময়িক সময়ের জন্য। নির্বাচনের পর পরবর্তীতে পরিস্থিতি বুঝে আবগারি দপ্তর ফোর -কিউ ক্যাটাগরির লাইসেন্সের দোকান খোলার অনুমতির নির্দেশ দিবে। পশ্চিমবঙ্গ লিকার শপ অ্যাসোসিয়েশনের কলকতার এক সদস্য অভিনব দাস বলেন, ভোট ঘোষণা হলো না। আর তার আগে নির্বাচনের অজুহাত দেখিয়ে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হলো। শতাধিক নতুন লাইসেন্সী ঋণের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন। জানুয়ারি মাসে ফোর-কিউ ক্যাটাগরিতে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। গোটা রাজ্যে প্রায় ৮৫০ থেকে ৯০০ নতুন লাইসেন্সী রয়েছে। বহু বেকার ছেলেরা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। কিন্তু তা এখন বন্ধ করে দেওয়া হলো । অথচ অন্যান্য ক্যাটাগরি যথা – ফোর -আই’তে পানশালার লাইসেন্সের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। জানুয়ারি মাসে অনেক নতুন পানশালার অনুমতি দিয়েছে আবগারি দপ্তর। কিন্তু সেগুলি বন্ধ হয় নি। পশ্চিমবঙ্গ লিকার শপ অ্যাসোসিয়েশনের নতুন লাইসেন্সীদের একাংশের দাবি, নির্বাচনের মুখে সমস্ত দোকান বন্ধ রাখা হোক। নইলে নতুন লাইসেন্সীদের অফ কাউন্টার খোলার নির্দেশ দেওয়া হোক। যদিও এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবগারি দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, এরকম সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন। কারণ বিগত দিনে নির্বাচন ঘোষণার আগে এরকম কোন ঘটনা ঘটে নি। যদিও নির্বাচনের পরে নতুন লাইসেন্সীদের দোকান চালুর নির্দেশ এসে যাবে। কিন্তু এরই মধ্যে নতুন লাইসেন্সীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সেই ক্ষোভের আঁচ হয়তো জেলায় জেলায় সংশ্লিষ্ট অফিসে আছড়ে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে । কারণ, কয়েকদিন আগেই মদের লাইসেন্স পাওয়াকে ঘিরে মুর্শিদাবাদ জেলার আফগারি দপ্তরের এক শীর্ষ কর্তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তারপর থেকেই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একাংশ কর্তারা।