দেশ

করোনার অডিট কমিটির পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারির জানতে চেয়ে মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠাল কেন্দ্রীয় দল

কলকাতাঃ: করোনা রিপোর্ট পজিটিভ, কিন্তু মৃত্যু করোনা সংক্রমণের জেরে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে চিকিত্‍সকদের নিয়ে অডিট কমিটি তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। এবার সেই কমিটির কাজের পদ্ধতি জানতে চাইল কলকাতায় আসা আন্তঃমন্ত্রক কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। এই দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে পাঠানো চিঠিতে লেখেন, করোনায় মৃত্যু হয়েছে কিনা, তা ঘোষণার ক্ষেত্রে কমিটি কী পদ্ধতি অবলম্বন করেছে? সেই পদ্ধতি কি আইসিএমআর-র গাইনলাইনর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ? এছাড় চিঠিতে বলা হয়েছে, কয়েকজন রোগীর ক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষার ফলাফল আসতে পাঁচ দিনের বেশি সময় লাগছে। কেন্দ্রীয় দল প্রতিদিন ২৫০০-৫০০০ পর্যন্ত পরীক্ষা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। রাজ্যেওর মুখ্যকসচিবকে ফের চিঠি দিল কেন্দ্রীয় দল। প্রথম চিঠিতে রাজারহাট কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ও বাঙ্গুর হাসপাতালের অব্যমবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। পাশাপাশি কেন টেস্ট ঠিকমতো হচ্ছে না, তা করতে এত সময়ই বা লাগছে কেন তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। বাঙ্গুর হাসপাতালের কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে চিঠিতে কমিটির প্রধান অপূর্ব চন্দ্র লিখেছেন, কয়েকজন রোগী বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের টেস্ট রিপোর্ট এখনও আসেনি। আবার কয়েকজনের টেস্ট নেগেটিভ হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা হাসপাতালে রয়েছেন। সামাজিক দূরত্ব ঠিকভাবে মানা হচ্ছে না এমন অভিযোগও রয়েছে সেই চিঠিতে। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতে বাঙ্গুর হাসপাতালের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল। সেই ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল মৃতদেহ হাসপাতাল ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে রয়েছে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে সেই বিষয়টি নিয়েও। জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন মারা যাবার পরেও মৃতদেহ অতক্ষণ ধরে হাসপাতালের বেডে অন্য রোগীদের সঙ্গে রেখে দেওয়া হয়েছিল। সার্টিফিকেট পেতে দেরি হয়ে থাকলেও মৃতদেহ মর্গে কেন চালান করা হয়নি সেই বিষয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। দ্বিতীয় চিঠিতে রাজ্যে যে ডেথ অডিট কমিটি তৈরি করা হয়েছে তার গঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অপূর্ব চন্দ্র। কী ভাবে কিসের ভিত্তিতে এই অডিট কমিটি গঠন করা হল। পাশাপাশি জানতে চাওয়া হয়েছে, এই ডেথ অডিট কমিটি কি সিআইএমআর এর গাইডলাইন মেনে কাজ করছে। এইসব প্রশ্ন তুলে আজ রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে দুটি চিঠি দিলেন কেন্দ্রের পাঠানো কমিটির প্রধান অপূর্ব চন্দ্র।  কলকাতায় আসা আন্তঃমন্ত্রক কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলটি গতকাল প্রথমে যায় রাজারহাটের কোয়রান্টিন সেন্টারে। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের শিক্ষা স্বাস্থ্য অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। সুপারের সঙ্গে আলোচনা সেরে এক ঘণ্টা ধরে হাসপাতাল পরিদর্শন করেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা। সেখান থেকে তাঁরা যান এম আর বাঙুর হাসপাতালে। সেখানেও ঘণ্টাখানেক ছিলেন তাঁরা। বাঙুরে আইসোলেশন ওয়ার্ড, আইসিসিইউ ঘুরে দেখেন তাঁরা। ওই হাসপাতালের পাশের বাড়িতে করোনা পজ়িটিভ এবং উপসর্গ থাকা রোগীরা ভর্তি রয়েছেন। সেখানে মর্গেও যায় পরিদর্শক দল। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের দলটি বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল লাগোয়া আবাসন কমপ্লেক্সে গিয়ে সেখানে কত জন থাকেন এবং খাবারের জোগান বিষয়ে খোঁজ নেয়। গতকাল বিকেলে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানান, কলকাতা পরিদর্শন করে স্বস্তি প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় দল। পর্যবেক্ষক দলের জন্য আর কিছু করার নেই। তিনি বলেন, “যা সহযোগিতা করার, আমরা করেছি। এলাকা দেখতে চেয়েছিল, দেখানো হয়েছে। স্বাস্থ্যসচিবের কাছে প্রেজ়েন্টেশন চেয়েছিল। তাও করা হয়েছে। যা তথ্য দেওয়ার দেওয়া হয়েছে। এর পর আর কিছু আমাদের তরফে দেওয়ার নেই। কেন্দ্রীয় দল এর পর তথ্য চাইলে ই-মেল করবে। পাঠিয়ে দেব।”

প্রথম চিঠি
দ্বিতীয় চিঠি
দ্বিতীয় চিঠি