হক জাফর ইমাম, মালদা: হঠাৎ ঝড় ও ব্রজপাতের থেকে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন একই পরিবারের ৫ সদস্য।ঘূর্নি ঝড় ও ব্রজপাতে মুহূর্তেই বাড়ির টিনের ছাউনি উড়ে গেল,দুমড়ে মুচড়ে পড়ল বাড়ির পাশে থাকা একটি আকাশমনি গাছের ডাল। অর্ধদৃষ্টি হীন ফারুক হোসেন সপরিবারে স্বস্তির নিদ্রায় বিভোর ছিলেন। হঠাৎ হাউমাউ করতে থাকে স্ত্রী নারগিস বিবি। দুই শিশু কন্যা এক ছেলের কান্নায় ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। ওই পাঁচজনের পরিবারটিকে উদ্ধার করেন বাসিন্দারা। তারা প্রানে বেঁচেছেন বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দা সয়েদ আলী। গভীর রাতে মালদা চাঁচল ১ নং ব্লকের খরবা জিপির দোগাছ গ্রামের ঘটনা।বাড়ির টিনের ছাউনি উড়ে যাওয়ায় বর্তমানে খোলা আকাশের নীচে আশ্রয়স্থল হয়েছে পরিবারটির। ওই গৃহীনি নারগিস খাতুন বিমর্ষ হয়ে বলেন, লকডাউনে না! স্বামী অর্ধদৃষ্টিহীন থাকায় আগে থেকেই কর্মহীন। বাপের বাড়ি থেকে জমির ভাগ নিয়ে কোনো মতে নিম্নমানের দালান ঘরটি দেয়েছি। তবে টিনের ছাউনি দিয়েছিলাম কিন্তু বাঁশের মাচা দিয়ে ছাদ করা হয়নি। টালির ছাউনি থাকলে প্রানহানী ঘটত বলে অনুমান গ্রামবাসীদের। নারগিস বিবি বলেন, কখন ধান বা অন্যান্য ফসল কেটে আবার সারাবছর
পরিচারিকার কাজ করে দৃষ্টিহীন স্বামী তিন সন্তানের সংসার চালায়। তবে এহেন পরিস্থিতি আমরা বিপাকে পড়েছি। এই দুঃ সময়ে খাদ্য সঙ্কটের সাথে আশ্রয় টুকুও বিলীন হল। বর্তমানে এই অবস্থায় দিশেহার পরিবারটি। স্থানীয় খরবা পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে যোগাযোগ করতে গেলে পঞ্চায়েত অফিসে দেখা যায় প্রধান পারভিন খাতুনকে। উপপ্রধান ও সাংবাদিকের ক্যামেরায় আসেননি। তবে তিরপাল দেওয়ায় কথা ভাবা হচ্ছে বলে পঞ্চায়েত সূত্রে খবর। এই কঠিন সঙ্কটজনক মুহুর্তে একটি তিরপালই কি যথেষ্ট। সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।পাশপাশি ভগবানপুর জিপির রামদেবপুরের রহিম আলীর ও বাড়ির ছাউনি উড়ে গেছে বলে খবর। পরিবার এখন শূন্য আকাশের নীচে বসবাস করছে।এদিকে মঙ্গলবারের ঝড়ের দাপটে চাঁচল ১ নং ব্লক এলাকার শতাধিক টিন ও টালির ছাউনি ভেঙে ও উড়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে বিভিন্ন পঞ্চায়েত গুলি জানিয়েছে। বুধবার মতিহারপুর,মহানন্দাপুর ও ভগবানপুর সহ ওই ব্লক এলাকার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে ক্ষয়ক্ষতি পূরণের আবেদন জমা পড়ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানরা। মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পপি দাস,মহানন্দাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান গোপাল চৌধুরী ভগবানপুর জিপির প্রধান সাবিনা খাতুনরা জানাচ্ছেন পঞ্চায়েততে আবেদন পড়ছে।
যতটা সম্ভব আমরা ত্রান প্রদান করব ব্লক আধিকারিক কে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি জানাব।আমফানের পরে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলাকায় ঘটবে ভাবতে পারেননি এলাকাবাসী। তবে বুধবার ও বৃহস্পতিবার দিনও মেঘলা আকাশ। দফায় দফায় ঝড়ের দাপটে আরো দুশ্চিন্তায় ফেলেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে।