মালদা

সীমান্তবর্তী এলাকায় পাট চাষকে কেন্দ্র করে কৃষকদের মারধরের অভিযোগ বিএসএফ জওয়ানদের বিরুদ্ধে

হক জাফর ইমাম, মালদা: সীমান্তবর্তী এলাকায় পাট চাষ করাকে কেন্দ্র করে গ্রামের কৃষকদের মারধর করার অভিযোগ উঠল বিএসএফ কর্তা ও জওয়ানদের বিরুদ্ধে৷ বিএসএফ-এর মারে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী৷ আহতদের মধ্যে ৪ জনকে মালদা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ তবে এনিয়ে এখনও পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি৷ কলাইবাড়ি গ্রামটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে৷ গ্রামের বেশিরভাগ মানুষের কৃষিজমি কাঁটাতারের বেড়ার পাশে৷ জানা গেছে, সম্প্রতি বিএসএফ-এর পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়, কাঁটাতারের এপারে ৩০০ মিটারের মধ্যে পাট চাষ করা যাবে না৷ সেই নির্দেশিকা সব গ্রামবাসীর জানা ছিল না৷ তাঁদের কয়েকজন অন্যান্য বছরের মতো এবারও কাঁটাতারের ১০০ মিটার দূরত্বে পাট চাষ করেন৷ এনিয়ে আজ সকালে ৪৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের মধ্যে থাকা শিরশি কলাইবাড়ি ক্যাম্পের

কম্যান্ডান্ট ওই চাষিদের কাছে কৈফিয়ত তলব করেন৷ সেই সময় চাষিরা খেতে কাজ করছিলেন৷ তখনই বিএসএফ কর্তা ও তাঁর গাড়ির চালক চাষিদের বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ৷ সেই খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসীরা রাস্তা অবরোধ করেন৷ আটকে পড়ে বিএসএফ-এর আরও একাধিক গাড়ি৷ খবর পেয়ে স্থানীয় ক্যাম্প থেকে বিএসএফ জওয়ানরাও ছুটে আসেন৷ তাঁরাও গ্রামবাসীদের মারধর করেন বলে জানা গেছে৷ এরপরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কলাইবাড়ি গ্রাম৷ শেষ পর্যন্ত দুপুর নাগাদ বিএসএফ আধিকারিকরা গ্রামে গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়৷
স্থানীয়দের বক্তব্য, আগে বিএসএফ জানিয়েচিল, কাঁটাতারের বেড়ার ১০০ মিটার ছেড়ে পাট চাষ করা যাবে৷ কৃষকরা সবাই সেই মতো পাট চাষ করেছে৷ কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, ১০০ মিটার নয়, ৩০০ মিটার ছেড়ে পাট চাষ করতে হবে৷ এখন জমিতে পাটের গাছ

গজিয়ে গেছে৷ আজ কম্যান্ডান্ট সেই সব গাছ নষ্ট করার নির্দেশ দেন৷ কিন্তু চাষিরা তাঁকে জানিয়ে দেয়, তারা কেউ নিজেরা চাষ নষ্ট করতে পারবে না৷ চাইলে বিএসএফ সেই কাজ করতে পারে৷ সেকথা শুনেই কম্যান্ডান্ট ও তাঁর গাড়ির চালক সবাইকে মারতে শুরু করেন৷
এই ঘটনায় এখনও পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি৷ এদিকে মালদা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন কলাইবাড়ি গ্রামের কৃষক সঞ্জয় সরকার, ভাষা সরকার, মলিন সরকার ও কানন সরকারকে দেখতে গিয়েছিলেন মালদা কেন্দ্রের বিধায়ক অর্জুন হালদার৷ তিনি বলেন, চিকিৎসায় ব্যস্ত থাকায় গ্রামবাসীরা এনিয়ে কোথাও এখনও অভিযোগ জানাতে পারেননি৷ তবে তাঁরা গোটা বিষয় নিয়ে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানাবেন৷ আজ বিএসএফ কর্তা যে কাজ করেছেন, তার তীব্র বিরোধিতা করছেন তিনি৷