বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র জেমস বন্ড। বিখ্যাত ব্রিটিশ লেখক ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সৃষ্ট এই অনবদ্য চরিত্র সিনেমার পর্দায় এসেও মানুষের মন জয় করেছে। যুগ যুগ ধরে জেমস বন্ড সিরিজ নিয়ে নির্মিত হয়েছে বহু সিনেমা। তবে এই জেমস বন্ড চরিত্রে যাকে সর্বপ্রথম দেখা গিয়েছিল এবং যাকে এখনও সেরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তিনি শন কনারি। প্রয়াত হলেন সর্বকালের সেরা জেমস বন্ড শন কনারি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। বাড়িতে অসুস্থ ছিলেন। পরিবারের কাছ থেকে এই খবর জানা গিয়েছে।খুব সাধারণ এক পরিবারে জন্ম শন কনারির। বাবা একটি ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন এবং লরি চালাতেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ভার্জিনিটি হারান শন কনারি। তিনি জানিয়েছিলেন, সে সময় একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন। অল্প বয়সেই কাজে যোগ দিতে হয়েছে শন কনারিকে। তার কর্মজীবন শুরু হয় দুধ বিক্রির মাধ্যমে। এডিনবার্গে তিনি ঘুরে ঘুরে দুধ বিক্রি করতেন। এরপর নেভিতে যোগ দেন। কিন্তু সে চাকরি টেকে না। এরপর বাবার মতো লরি চালিয়েছেন, লাইফগার্ডের চাকরি করেছেন, দৈনিক মজুরিতে শ্রমিকের কাজও করেছেন শন কনারি। পঞ্চাশের দশকে শুরু হয় শন কনারির অভিনয় ক্যারিয়ার। ১৯৫১ সালে তিনি আয়ের আশায় ‘কিংস থিয়েটার’-এর ব্যাকস্টেজে সহযোগিতার কাজ করতেন। বডি বিল্ডিংয়ের সুবাদে ১৯৫৪ সালের দিকে ‘সাউথ প্যাসিফিক’ মিউজিক্যালে কাজের সুযোগ পান শন কনারি। এরপর ধীরে ধীরে থিয়েটারের প্রতি আগ্রহ বাড়ে শন কনারির। পাশাপাশি সুযোগ পান সিনেমায়। তবে সেটা এক্সট্রা আর্টিস্ট হিসেবে। ১৯৫৪ সালে ‘লিল্যাকস ইন দ্য স্প্রিং’-এ তিনি খুব ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেন। শন কনারি উল্লেখযোগ্য চরিত্রে প্রথম অভিনয় করেন ১৯৫৭ সালে ‘নো রোড ব্যাক’ সিনেমায়। ১৯৬২ সালে জেমস বন্ড নিয়ে প্রথম সিনেমা নির্মিত হয়। ‘ড. নো’ সিনেমায় ০০৭ তথা জেমস বন্ডের রূপে হাজির হন শন কনারি। ব্যাস, ঘুরে যায় তার ভাগ্যের চাকা। জেমস বন্ড সিরিজের মোট সাতটি সিনেমায় বন্ড চরিত্রে অভিনয় করেন শন কনারি। ১৯৮৮ সালে তিনি অস্কার পান। আজ এই অভিনেতার প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমেছে সিনেমা জগতে।