সূত্রের খবর, চিটফান্ড কেলেঙ্কারি, মেট্রো ডেয়ারির শেয়ার হস্তান্তর, কয়লা পাচার-সহ কয়েকটি অভিযোগের তদন্তে এবার কোমর বেঁধে নামছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। আর পুরো নিয়ন্ত্রণ থাকছে দিল্লির ইডির সদরদপ্তরের হাতে। মঙ্গলবার এনিয়ে রাজধানীতে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার শীর্ষকর্তারা। কীভাবে তল্লাশি চালানো হবে এবং তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে কাদের কাদের ডাকা হবে তার রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। মেট্রো ডেয়ারির শেয়ার হস্তান্তর নিয়ে ইডি অনেকদিন ধরে তদন্ত করছে। এই সংস্থার শেয়ার বাজার চলতি দামের চেয়ে অনেক কম দামে বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এতদিন এই ঘটনার তদন্তে বিশেষ অগ্রগতি হয়নি। এটি কানে গিয়েছে দিল্লির কর্তাদের। এদিনের বৈঠকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় মেট্রো ডেয়ারির তদন্তের কাজ। এই সংক্রান্ত নথি খতিয়ে দেখা হয়। দেখা যায়, তদন্তে অনেক জায়গায় ফাঁক রাখা হয়েছে। অনেক নথি এখনও সংগ্রহ করা বাকি। কেন এতদিনে তা করা গেল না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কর্তারা। রীতিমত অসন্তুষ্ট তাঁরা। এই সংক্রান্ত প্রমাণ দ্রুত জোগাড় করতে বলা হয়েছে। সদরদপ্তরের কর্তারা জেনেছেন প্রভাবশালী ঘনিষ্ঠ এক ব্যাবসায়ীকে এই সংস্থার শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হয়। টেন্ডার প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে আরও অনেক জায়গায় গলদ আছে। এটি ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করা নাকি ভুলক্রমে হয়ে যায় সেটি দেখতে বলা হয়েছে। প্রভাবশালী যোগের তথ্য খুঁজে দেখতে বলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কয়লা পাচার কাণ্ডে আইটির কাছ থেকে নথি সংগ্রহ করেছে ইডি। তা ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে প্রভাবশালীদের টাকা দুবাই, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড-সহ একাধিক দেশে গিয়েছে। ভুয়ো কোম্পানির মাধ্যমে কাগুজে লেনদেন দেখিয়ে এই টাকা পাঠানো হয়েছে বিদেশে। এরপর হাওলা করে টাকা চলে এসেছে প্রভাবশালী ব্যক্তি বা তাঁর ঘনিষ্ঠদের কাছে। হাওলার প্রসঙ্গ উঠে আসায় মানি লন্ডারিং অ্যাক্টে মামলা রুজু করে তল্লাসি চালাতে চায় ইডি। কোন নথির ভিত্তিতে সেটি করা হবে তার গাইডলাইন দিয়ে দিয়েছেন দিল্লির আধিকারিকরা। তল্লাশির ক্ষেত্রে গোটা বিষয়টি সদরদপ্তরে বসে নিয়ন্ত্রণ করবেন কর্তারা। সেইসঙ্গে একাধিক টিম তৈরি করা হচ্ছে। প্রত্যেককে আলাদা আলাদা দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি টিম আলাদা আলাদাভাবে দিল্লিতে রিপোর্ট করবেন। যাতে কেউ কারও তথ্য জানতে না-পারে। কম্পাইলেশনের কাজ চলবে দিল্লিতে। তারপর যেমন নির্দেশ আসবে সেইমতো রাজ্যে তল্লাশি চালাবেন এখানকার অফিসাররা। এর সঙ্গে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির জমা দেওয়া আয়কর রিটার্নের নথি যাচাই করছেন ইডি আধিকারিকরা। কারও যদি সম্পদের বৃদ্ধি ঘটে থাকে তাহলে সেই টাকা কোথা থেকে এল, তার ব্যাখ্যা সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালীদের কাছ থেকে চাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।