জেলা

বাম কর্মী মইদুল জেএমবি জঙ্গি! বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ঘিরে তোলপাড়

মইদুল কাণ্ডে এবার সেই সব সীমা ছাড়িয়ে গেল গেরুয়া শিবির। কার্যত রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে মইদুল কাণ্ডে বিজেপির ভূমিকা স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক বিভাজন ও বিদ্বেষ ছড়িয়েই তাঁরা ভোটের ময়দানে জেতার লক্ষ্যে নামতে চলেছে। যদিও সেই লড়াইয়ে বাংলার কতজন মানুষের সমর্থন তাঁরা পাবেন তা নিয়ে যেমন বিস্তর সন্দেহ রয়েছে তেমনি সন্দেহ রয়েছে বাংলার ক্ষমতা যদি তাঁরা একান্তই দখল করে ফেলতে সক্ষম হন তখন সংখ্যালঘু মানুষদের সঙ্গে তাঁরা কী ব্যবহার করবেন তা নিয়েও। আর এই প্রশ্ন উঠে যাওয়ার মূলে রয়েছে এক বিজেপি কর্মীর করা ফেসবুকের একটি পোস্ট যা রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সেই পোস্টে বলা হয়েছে নবান্ন অভিযানে গিয়ে পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয়ে মারা যাওয়া ডিওয়াইএফআই নেতা মইদুল ইসলাম মিদ্দ্যা নাকি জঙ্গি! কতটা নীচে নামলে এই দাবি করা যায় তা ওই বিজেপি কর্মী দেখিয়ে দিয়েছেন। এখন অনেকেই মনে করছেন ওই পোস্ট কার্যত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই করা হয়েছে। এর পিছনে বড় কোনও ষড়যন্ত্র কাজ করছে। বিজেপি কর্মী দিবাকর দেবনাথ এই চরম নিন্দানীয় পোস্টটি করেছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘মইদুল ইসলাম ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জেএমবি-র সঙ্গে যুক্ত ছিল। এনআইএ রিপোর্ট তাই বলছে। যা হয়েছে ভালই হয়েছে।’ এই দিবাকর দেবনাথ আলিপুরদুয়ার জেলার বিজেপির আইটি সেলের কর্মী। তার এই পোস্ট ও দাবি যে শুধুই চরম নিন্দাজনক তাই নয়, চূড়ান্ত মিথ্যাও। ইতিমধ্যেই বামেদের তরফ থেকে এই পোস্ট ঘিরে তীব্র আপত্তি যেমন উঠেছে তেমনি দিবাকরকে গ্রেফতার না করলে রাজ্য অচল করে দেওয়ার হুমকিও উঠছে। মইদুল কাণ্ডে এমনিতেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। তারই মধ্যে বামেরা যেমন পুলিশের বিরুদ্ধে অমানবিকতার অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তেমনিই মইদুলের স্ত্রীকে হোম গার্ডের চাকরি দিয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু আলিপুরদুয়ারের কামাখ্যাগুড়ির বিজেপির আইটি সেলের কর্মী দিবাকর দেবনাথ সোশ্যাল মিডিয়ায় মইদুলকে নিয়ে যে চূড়ান্ত নিন্দানীয় পোস্টটি করেছে তাতে করে মইদুলকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতি আরও একদফা উত্তপ্ত হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সংগঠনের এমন এক লড়াকু নেতাকে ‘জঙ্গি’ তকমা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ রাজ্য বাম নেতৃত্ব। ঘটনার বিচার চেয়ে ইতিমধ্যেই সাইবার ক্রাইমের দ্বারস্থ হয়েছেন ডিওয়াইএফআই-এর আলিপুরদুয়ার জেলা কমিটি। তাঁরা অবিলম্বের দিবাকর দেবনাথকে গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন। দু’দিনের মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা না হলে ডিওয়াইএফআই জেলা তো বটেই গোটা রাজ্যজুড়েই বড় ধরনের আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ডিওয়াইএফআই-য়ের জেলা সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিজনক পোস্ট করেছেন দিবাকর দেবনাথ। তিনি আলিপুরদুয়ারের কামাখ্যাগুড়ির বাসিন্দা। আমরা চাই তাকে অবিলম্বে পুলিশ গ্রেফতার করুক। নইলে আমরাও রাজ্যজুড়ে বড় আন্দোলনে নামবো।’