চমকে ভরা তৃণমূলের ২৯১ জন প্রার্থীর তালিকা। ধারা বজায় রেখে এবারও তালিকায় স্থান পেলেন ৪২ জন মুসলিম প্রার্থী। প্রতিদ্বন্দ্বিতার ময়দানে ৫০ জন মহিলা প্রার্থীও। তফশিলিরা জাতি-উপজাতি প্রার্থীর সংখ্যা ৭৯। কঠিন লড়াই জয়ে মমতার এবার ভরসা রেখেছেন তারুণ্যে। ৮০ বছরের ঊর্ধ্বে পাঁচ মন্ত্রী সহ বহু প্রবীণ বিধায়ককেই এবার ভোটে টিকিট দেয়নি তৃণমূল সুপ্রিমো। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে ২৭ জন বিধায়ক প্রার্থী হতে পারলেন না। এর মধ্যে ৫জন মন্ত্রী রয়েছেন।অন্যদিকে জোড়া-ফুল নেত্রীর বাজি এবার রূপোলি পর্দায় একাধিক জনপ্রিয় মুখ। ভোটের ময়দানে সায়নী, রাজ চক্রবর্তী, লাভলি, জুন মালিয়া, সায়ন্তনীরা। যদিও বাদ পড়েছেন টলিউডের পুরনো মুখ দেবশ্রী রায়। খেলার জগত থেকে রয়েছেন মনোজ তিওয়ারি ও বিদেশ বসু। করোনা আবহে ভোটের কারণে এবার ৮০ বছরের উর্ধ্বের ভোটারদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে হবে জানিয়েছে কমিশন। ৮০ বছর বয়সীদের টিকিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত কমিশনকে অনুসরণ করেই বলে দাবি তৃণমূলের নেত্রীর। কমিশনের সিদ্ধান্তকে মাণ্যতা দিয়ে বয়স ও শীরিরিক অসুবিধার কারণে এবার ভোটে টিকিট দেওয়া হয়নি মমতার মন্ত্রিসভার দু’বারের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে। তাঁর কেন্দ্র খড়দহে এবার পুর চেয়ারম্যান কাজল সিংকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। বাদ গিয়েছেন পুর্ণেন্দু বসুও। রাজারহাট-গোপালপুরে তৃণমূলের বিধায়ক ছিলেন তিনি। এবার তাঁর জায়গায় প্রার্থী সদ্য দলে যোগ দেওয়া সঙ্গীত শিল্পী অদিতি মুন্সি। খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ এবং উদ্যানপালন দফতরের মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লাকেও এবার ভাঙড় থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। রেজ্জাক বামফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্ও ছিলেন। পরে ২০১৬ সালে বিধানসবা ভোটের আগে দল বদলে তৃণমূলে আসেন। বয়সের কারণেই তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি বলে সূত্রের খবর। এবার তাঁর আসনে লড়াই করবেন মহঃ রেজাউল করিম। বাদ পড়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের প্রতিমন্ত্রী রত্না ঘোষ কর। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে এবার প্রার্থী কল্পনা কিস্কু। অন্যদিকে রত্নার কেন্দ্র নদিয়ার চাকদহ থেকে এবাপর লড়াই করবেন শুভঙ্কর সিং। এছাড়াও তৃণমূলের তালিকা থেকে বাদ পড়া হেভিওয়েট রাজনৈতিক মুখগুলোর মধ্যে অন্যতম সোনালি গুহ। বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন সোনালিই ছিলেন মমতার ছায়া সঙ্গী। জ্যোতি বসু রাজনীতি থেকে অবসরের পর ২০০১ সালে সাতগাছিয়ায় তৃণমূলের হয়ে ভোটে দাঁড়ান তিনি। তারপর থেকে পর পর তিনটি বিধানসভা নির্বাচনে জয় লাভ করেছেন সোনালী। সূত্রের খবর, শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবার আর তাঁকে টিকিট দেননি নেত্রী। এবার সাতগাছিয়া থেকে জোড়া-ফুলের হয়ে লড়বেন মোহনচন্দ্র নস্কর। টিকিট পাননি ভাঙড়ে অন্যতমের অন্যতম নেতা আরাবুল ইসলামও। এছাড়া বয়সজনিত কারণেই তৃণমূলের টিকিট পাননি জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর সিঙ্গুরের বিধায়ক মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। এবার লড়াইয়ের ময়দানে আর দেখা যাবে না হাওড়ায় তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা দুই সদস্য জটু লাহিড়ী ও ব্রজ মজুমদারকেও। বাদ পড়ছেন উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূলের স্তম্ভ অমল আচার্যও। আগেই সরে দাঁড়িয়েছেন মমতার প্রিয় বুয়া তথা সমীর চক্রবর্তী।