বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশে নির্যাতিতা এবং অভিযুক্তকে একইসঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখল গ্রামবাসীরা। শাস্তি হিসাবে ধর্ষকের সঙ্গেই নির্যাতিতাকে বেঁধে মিছিলে হাঁটতে বাধ্য করা হল। এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী রইল মধ্যপ্রদেশের উপজাতি অধ্যুষিত আলিরাজপুর জেলা। অভিযোগ, ১৬ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে ২১ বছরের এক যুবক। ঘটনা জানাজানি হতে গ্রামবাসীরা প্রকাশ্যে নির্যাতিতা ও অভিযুক্তকে একসঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে। এই ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত-সহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, জোবাত থানার অন্তর্গত ওই গ্রামে নির্যাতিতা ও অভিযুক্তকে দড়ি দিয়ে বেঁধে কয়েকজন গ্রামবাসী মারধর করছে। তাদের জোর করছে সবার সামনে দিয়ে হেঁটে যেতে। সেইসঙ্গে গ্রামবাসীরা স্লোগান দিচ্ছে ‘ভারত মাতা কি জয়’। নাবালিকার অভিযোগ অনুযায়ী, পাশের গ্রামের এক ব্যক্তি তার উপর যৌন নির্যাতন চালায়। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে তার আত্মীয়রাই তাকে প্রথমে বেধড়ক মারধর করে। এরপর অভিযুক্তের সঙ্গে বেঁধে গোটা গ্রামে ঘোরানো হয় তাকে। ঘটনা নিয়ে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্যাতিতা কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশের প্রবীণ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। উপ-বিভাগীয় পুলিশ অফিসার (এসডিওপি) দিলীপ সিং বিলওয়াল জানিয়েছেন, নির্যাতিতার দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতে রবিবার দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে। বিলওয়াল বলেন, ‘ধর্ষণে অভিযুক্ত ২১ বছরের ওই যুবকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মেয়েটির পরিবারের লোকজন ও গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে গ্রামে তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে মারধরের অভিযোগেও আর একটি এফআইআর দায়ের করা হয়। অভিযুক্ত বিবাহিত। তার দুই সন্তানও আছে। তাকে ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি) অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি পকসো আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।’ নির্যাতিতার পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনদের বিরুদ্ধে ধারা ২৯৪ (প্রকাশ্যে অশ্লীলতা আইন), ৩৫৫ (ব্যক্তিকে অসম্মান করার উদ্দেশ্যে আক্রমণ বা ফৌজদারি বাহিনী), ৩২৩ (স্বেচ্ছায় আহত করা), ৩৪২ (ভুল বন্দিদশা) এবং অন্যান্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।