বাংলার মানুষের কাছে বিজেপি স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তৈরি করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ
বাংলায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বার বারই বলেছিলেন আবকি বার ২০০ পার। কিন্তু তৃতীয় এবং চতুর্থ দফা ভোট গ্রহণের পর থেকে বিজেপি এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা বন্ধ করে দিয়েছে। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গোপন গোয়েন্দা রিপোর্টে কার্যত নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে বাংলায় এবারের নির্বাচনে ২০০ বিধানসভার বেশি জিতে সরকার গঠন তো দূরের কথা তিন অঙ্ক অর্থাৎ ১০০টি আসন জেতা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ছে প্রতিটি দফা ভোট গ্রহণের পরে। তারপরেই কার্যত তুমুল ক্ষিপ্ত বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, গোপন গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে পাঁচ দফায় বিজেপি পেতে পারে ৫২টি আসন! বাকি তিন দফা মিলিয়েও ৭৫ আসনের বেশি জেতা সম্ভব হবে না। তাই গোপন গোয়েন্দা রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে যে বিষয়গুলি নিয়ে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সবথেকে বেশি উদগ্রীব, তা হল বাংলায় স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোন বিরোধী রাজনৈতিক দল তিন অঙ্কে পৌঁছতে পারেনি। অর্থাৎ তৃণমূল যদি একা ১৯০-২০৪ বিধানসভা আসনের জিতে যায় তাহলে বিজেপির পক্ষে ১০০টি আসন ছোঁয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ বাংলায় ত্রিশঙ্কু বিধানসভা হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকছে না। দ্বিতীয়ত, সব থেকে বড় কারণ হল বাংলায় রাজ্য নেতৃত্তের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের জন্য তৃণমূল থেকে যাবতীয় দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা এবং নেত্রীদের রাতারাতি বিজেপির প্রথম সারির নেতা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বাংলার মানুষের কাছে বিজেপি স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তৈরি করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, “শুভেন্দু অধিকারী, শ্যামা প্রসাদ মুখোপাধ্যায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়, বৈশালী ডালমিয়া, জটু লাহিড়ী, সোনালী গুহ – এই নেতা এবং নেত্রীরা তৃণমূলে থাকার সময় ডুবেছিলেন আকণ্ঠ দুর্নীতিতে। বাংলায় গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রচার মূল টার্গেট ছিলেন এরাই। অথচ এবারে বাংলার রাজ্য নেতৃত্তের কর্ণধারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে কার্যত ভুল বুঝিয়ে এই সমস্ত আকণ্ঠ দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের তড়িঘড়ি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ তৈরি করেন। সেটাই পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে সবথেকে ভুল সিদ্ধান্ত বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের।” তৃতীয়ত, তৃণমূল থেকে আসা এই সমস্ত দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের রাতারাতি নির্বাচনী কমিটিতে জায়গা দিয়ে দলের পুরনো নেতা এবং কর্মীদের প্রতি বঞ্চনা করা হয়েছে। বাংলায় বিজেপি সংগঠন তৈরি করার বহু আগে থেকেই এখানে সংগঠন তৈরি করার কাজ শুরু করেছিল আরএসএস। অধিকাংশ আসনেই আরএসএস এর তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও শুভেন্দু অধিকারী অথবা এই সমস্ত নব্য বিজেপি নেতাদের চাপে চরিত্রহীন এবং দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের টিকিট দেওয়া হয়েছে।
প্রতীকী ছবি।