রাজ্যসভায় কাকে পাঠাবে তৃণমূল এই নিয়ে তুমুল জল্পনার মাঝে অভাবনীয় সিদ্ধান্ত নিল দল। রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হচ্ছেন প্রসার ভারতীর প্রাক্তন অধিকর্তা জহর সরকার। দীনেশের ছেড়ে যাওয়া সেই আসনেই আগামী ৯ আগস্ট উপনির্বাচনের জন্য ভোট নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। যেহেতু রাজ্যসভার আসন, তাই সেই নির্বাচনে ভোট দেবেন শুধুমাত্র বাংলার বিধায়কেরা। সেই আসনেই তৃণমূলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে দেশের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিংয়ের নাম প্রায় চূড়ান্ত বলেই শোনা যাচ্ছিল। এমনকি নাম ঘুরছিল মুকুল রায়েরও। কিন্তু সেই দুই নামের কেউই চূড়ান্ত ছাড়পত্র পেল না তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। বরঞ্চ সবাইকে অবাক করে দিয়ে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে নাম ভেসে উঠলো প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকারের। তৃণমূলের পক্ষ থেকে ট্যুইট করে এই কথা জানানো হয়েছে। টুইটে বলা হয়েছে, “আমরা শ্রী জহর সরকারকে রাজ্যসভার জন্য মনোনীত করতে পেরে আনন্দিত। জীবনের ৪২ বছর জহর সরকার জনসেবার কাজ করেছেন। প্রসারভারতীতে দীর্ঘসময় সিইও পদে আসীন ছিলেন তিনি। সাধারণ মানুষের সেবায় তাঁর যে অমূল্য অবদান, তা ভবিষ্যতেও আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।” জহরবাবু শুধু প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও’ই নন, তিনি বাংলার সংস্কৃতি ও দেশের কৃষ্টির অন্যতম ধারক ও বাহকও। মোদি জমানায় যে ভাবে দেশের বহু জাতিতত্ত্ব ধাক্কা খেয়েছে তার বিরুদ্ধে জহরবাবু বার বার সরব হয়েছেন। এমনকি এনআরসি বা সিএএ নিয়েও তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সাম্প্রতিক কালে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে মোদি সরকার যেভাবে হেনস্থা করা শুরু করেছিল তিনি তাঁরও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কাণ্ডে জহর সরকারের অবস্থান ছিল সরাসরি কেন্দ্র বিরোধী। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ নিয়ে সরাসরি কলম ধরেছিলেন তিনি। তিনি স্পষ্টই বলেছিলেন, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এর বদলির রুচিসম্মত নয়. আইনসম্মতও নয়।এমনকি এই ইস্যুতে মোদি ও অমিত শাহকে টুইটারে আক্রমণ করে লিখেছিলেন ‘মোদি-শাহ পাগল হয়ে গিয়েছেন।’ সেই জহর সরকার যদি রাজ্যসভায় যান সন্দেহ নেই তাতে মোদি-শাহের অস্বস্তি বাড়বে বই কমবে না। রাজনৈতিক মহলের মত পাশে থাকারই পুরস্কার পেলেন জহর সরকার।