আগরতলা বিমান বন্দরে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল নামতেই আটকে দেয়া হয় তাঁদের। সূত্রের খবর, তড়িঘড়ি ত্রিপুরা প্রশাসনের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয় রাজ্যে প্রবেশ করতে হলে কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট বাধ্যতামূলক। সঙ্গে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট না থাকায় বাধার মুখে পড়তে হয় মলয় ঘটক, ব্রাত্য বসু ও ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাই নিয়েই এক প্রস্থ বচসা হয় বিমানবন্দরে। অন্যদিকে হোটেলে আটকে রাখা আইপ্যাকের কর্মীদের দলপ করল পূর্ব আগরতলা থানার পুলিশ। আগামী ১ অগস্ট তলব করা হয়েছে তাদের। বিপ্লব দেবের রাজ্যে গিয়ে হেনস্তার মুখে পড়তে হয়েছে আইপ্যাকের ২৩ জন কর্মীকে। খবর প্রকাশ শাস্তি জাতীয় রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়। তৃণমূল কংগ্রেস স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে ময়দানে নামে। তিন শীর্ষ নেতাকে জোড়া ফুল শিবিরের প্রতিনিধি হিসেবে ত্রিপুরায় পাঠানো হয়। তবে শুরুতেই তৃণমূল প্রতিনিধি দলকে বাধার মুখে পড়তে হয়। ইতিমধ্যেই তারা হোটেলে উঠেছেন। এবং সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন। সূত্রের খবর পিকের টিমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজই কথা বলবেন তাঁরা।অন্যদিকে একই সময়ে আইপ্যাকের কর্মীদের তলব করল পূর্ব আগরতলা থানার পুলিশ। কোভিড বিধি উপেক্ষা করার অভিযোগে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। এদিন আগরতলা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করেন ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক এবং ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তাঁরা বলেন, এই আটক করে রাখার ঘটনা আসলে স্বৈরাচারী প্রবণতা। ব্রাত্য বসু সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখনই এত ভয়? আইপ্যাক তো কোনও রাজনৈতিক সংগঠন নয়। ২৩ জনের অপরাধটা কী? তাঁদের মাথার উপর প্রশান্ত কিশোর রয়েছে, তাই?’ তৃণমূল নেতাদের আরও বক্তব্য, বাংলায় তো গোটা দেশ থেকে নেতাদের নিয়ে হাজির করেছিল বিজেপি। তখন কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ চূড়ান্ত পর্যায়ে। কই তখন তো কাউকে এ ভাবে আটকে রাখেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ!’ তৃণমূল নেতারা বারবার করে একটাই কথা বলার চেষ্টা করেন, তা হল বিপ্লব দেব সরকার ভয় পেয়ে গিয়েছে। সেটাকেই বেশি করে তুলে ধরতে চাইছেন তাঁরা। ত্রিপুরায় এখন বিরোধী দল সিপিএম। বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার গতকালই একটি সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, ‘এটা কী ধরনের সরকার। একটা দল সমীক্ষা করতে এসেছে। তারা আসতেই পারে। এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। তাই বলে তাঁদের হোটেলে বন্দি করে রাখা হবে?’ এখানেই থামেননি ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, এসব কেন করছে? আসলে সরকার ভয় পেয়েছে। ভীতি থেকে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সরকারের এই ভীতির কারণ তাদের পাশ থেকে জনগণ সরে যাচ্ছে। মানিক সরকার যে সুরে ভয়ের কথা বলেছিলেন, কার্যত এদিন একই কথা বললেন ব্রাত্য, ঋতব্রতরা। বামেদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে ব্রাত্য বসু বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের বামেরা বিধানসভা ভোটে যে ভুল করেছিলেন, সেই ভুল ত্রিপুরার বামপন্থীরা না করলেই ভাল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা না করে তাঁদের উচিত ওঁর পাশে দাঁড়ানো। কারণ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মমতাই এখন একমাত্র বিকল্প।’