নিউটাউন পর্ণোগ্রাফি চক্রে তত্পর ভূমিকা নিল বিধাননগর পুলিশ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল নিউটাউন থানা। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০০, ৫০৯, ৩৫৪বি, ৩৫৪সি, ৪১৭, ৪৬৯, ৩৭০ এবং ৩৪ ধারায় এফ আই আর দায়ের করে পুলিশ। এমনটাই পুলিশ সূত্রে খবর। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল স্থানীয় প্রাইড হোটেল। অভিযোগ পাওয়ার তিন দিনের মাথায় বুধবার গ্রেফতার করা হয় পর্ন নায়িকা নন্দিতা দত্ত, তাঁর সঙ্গী মৈনাক ঘোষ এবং হোটেল কর্তৃপক্ষকে। হদিশ চলছে ঘটনার
সঙ্গে জড়িত বাকি অভিযুক্তদের। তাঁদের সঙ্গে রাজ কুন্দ্রার পর্ন-কাণ্ডের যোগ রয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারই তাঁদের বারাসত আদালতে হাজির করানো হয়। চার দিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে তাঁদের। সূত্রে খবর, শুধু নন্দিতা এবং মৈনাক নন,পর্ন-কাণ্ডে জড়িত আরও অনেকে। তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে একে একে উঠে আসবে এই কাণ্ডে জড়িত বাকিদের নাম। নন্দিতার বাড়ি দমদমে। মৈনাকের বাড়ি নাকতলা। পুলিশ সূত্রে খবর, নন্দিতাই মূলত এই চক্রটি চালাতেন। মৈনাক চিত্রগ্রাহক। ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে তাঁরা উঠতি মডেল এবং ‘ইচ্ছুক’ ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। পুলিশ এ-ও
জানিয়েছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে তাঁদের শ্যুটিং হত। ‘নিওফ্লিক্স’ এবং ‘রেডওয়াইপ টু’-তে দেখানো হত। মূলত বিদেশ থেকে ওই সব ক্লিপ আপলোড করা হত। এই ঘটনার দিন কয়েক আগেই অর্ধনগ্ন ছবি তুলে নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে জয়শ্রী মিশ্র, প্রতাপ ঘোষকে। বিধাননগর সাইবার অপরাধ দমন শাখা গ্রেফতার করেছে তাঁদের। সূত্রের খবর, নিউটাউনের তিন তারা হোটেলে অবাধে চলত পর্ণোগ্রাফির শুটিং। টার্গেট থাকতো নতুন মুখ। সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠতি মডেলদের
টার্গেট করেই রমরমিয়ে চলতো নীলছবির কারবার। বিদেশের ওটিটি অ্যাপে সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডাকা হত হোটেলে এরপরই জোর করে ধমকি দিয়ে শ্যুট করানো হত পর্ণোগ্রাফি ভিডিও। এমনই পর্ণোগ্রাফি চক্রের শিকার নিউটাউনের এক বেসরকারী সংস্থার কর্মী। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে যুবতীর সঙ্গে পরিচয় হয় একজন ফটোগ্রাফারের। সেখানেই তাকে প্রস্তাব দেয় ফটো শ্যুটের। গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে সুযোগের হাতছানি হাতছাড়া করতে চাননি নিউটাউনের বাসিন্দা ওই যুবতী। যোগাযোগ হলে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বালিগঞ্জের একটি বাড়িতে। সেখানে গিয়ে সে জানতে পারে শাড়ির ফটোশ্যুট নয়, তাঁকে করতে হবে নগ্ন
ফটোশুট। জানতে পেরে সে ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে গেলে তাকে ‘হুমকি’ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ যুবতীর। তাকে দিয়ে জোর করে করানো হয় অর্ধনগ্ন ফটোশ্যুট। একই ধরনের ঘটনা ঘটে আরও এক উঠতি মডেলের সঙ্গে। সোশ্যাল মিডিয়াতে পরিচয়ের পরে তাঁকে আসতে বলা হয় নিউটাউনের একটি তিন তারা হোটেলে। সেখানে ৮তলার একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁকে দিয়ে জোর করে করানো হয় পর্ণোগ্রাফি ভিডিও। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হতেই পুলিশের দারস্ত হন দুই যুবতী। নিউটাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নিউটাউন থানার পুলিশ।