লকডাউনের কারণে অনেকেই ছেলেমেয়েদের স্কুল ফি জমা দেয়নি। কিন্তু তা নিয়ে এ বার কঠোর রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিল, ৩ সপ্তাহের মধ্যে স্কুলের বকেয়ার ফি-র ন্যূনতম ৫০ শতাংশ মিটিয়ে দিতে অভিভাবকদের। তা না করলে ওই পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন রায় ঘোষণা সময়ে বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন। আদালতের কথায়, এটা খুব দুঃখজনক যে বহু অভিভাবক সরকারি চাকরি করছেন, তাঁদের আর্থিক স্বচ্ছলতা রয়েছে, তাও ছেলেমেয়েদের স্কুল ফি-র টাকা দিচ্ছেন না। স্কুলের ফি ছাড়া অন্য সব ব্যাপারে তাঁরা টাকা খরচ করছেন। কিন্তু এ ব্যাপারেই শুধু অনীহা। এটা খুবই উদ্বেগের এবং দুঃখজনক। বলে রাখা ভাল, এ ক্ষেত্রে সরকারি স্কুলের ব্যাপারে কোনও তর্ক নেই। সবই বেসরকারি স্কুল সংক্রান্ত বিষয়। এদিন আদালত রায় ঘোষণা পর আইনজীবীরা তাঁদের ব্যাখ্যা বলেছেন, আদালত আসলে বোঝাতে চেয়েছে যে অভিভাবকরা যদি ন্যূনতম স্কুল ফি না দেন, তা হলে তো স্কুলগুলোই সমস্যা পড়বে। কারণ, বেসরকারি স্কুলগুলি শিক্ষক, শিক্ষিকাদের বেতন দিচ্ছে। পরিকাঠামোগত খরচ রয়েছে। তা ছাড়া কমবেশি সব স্কুল অনলাইনে পঠনপাঠন চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, স্কুল ফি-র ৮০ শতাংশ টাকা দিতে হবে। সেই নির্দেশ অনেকেই মানেনি। তা নিয়ে এদিন বিচারপতিরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। হাইকোর্টের রায়ে আরও বলা হয়েছে যে সমস্ত পড়ুয়া মাধ্যমিক বা দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ডের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, তাদের স্কুল ফি বকেয়া থাকলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শংসাপত্র নাও দিতে পারে। ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ন্যূনতম স্কুল ফি জমা না দিলে কোনও পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করা বা স্কুল থেকে বিতাড়িত করার অধিকারও থাকবে স্কুল কর্তৃপক্ষের। এ জন্য আগাম নোটিস দেওয়ারও প্রয়োজন হবে না।