কলকাতা

মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করল আরজিকরের আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার-রা

 আরজিকর হাসপাতালের পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। আন্দোলনরত পড়ুয়া তথা জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ লাগাতার ‘কর্মবিরতি’ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে অনড় রয়েছে। ফলে সমস্যার সমাধানের কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। বরঞ্চ জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে হাসপাতালের স্বাভাবিক কাজকর্ম ও রোগীদের চিকিত্‍সাও ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ রোগীর পরিজনদের। এমনকি দ্রুত হারে কমছে রোগীদের ভর্তির সংখ্যাও। সমস্যা মেটাতে এদিন দুপুরে শহরের মোহিত মঞ্চে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে বৈঠকে বসে ৫ সদস্যের মেন্টর গ্রুপ। ৪ জন বিধায়ক ও এক সাংসদকে নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকেও কোনও সমাধান সূত্র বার হয়নি বলেই আন্দোলনরত পড়ুয়াদের তরফে জানা গিয়েছে। আরজিকর হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের লাগাতার ‘কর্মবিরতি’র জেরে সেখানে ইতিমধ্যেই চিকিত্‍সা পরিষেবা ‘ব্যাহত’ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোগীর পরিজনেরাই সেই অভিযোগ তুলেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা এটাও জানিয়েছেন, জরুরি বিভাগ থেকে রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে আর যারা ভর্তি আছেন তাঁদের অন্য হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতি যে সত্যি করেই দেখা দিয়েছে তা আন্দোলনকারীরা মেনে নিলেও মানতে চাইছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, হাসপাতালের সব কাজকর্মই স্বাভাবিক আছে। রোগীদের চিকিত্‍সা ক্ষেত্রেও কোনও সমস্যা হচ্ছে না। তবে আন্দোলকারীদের দাবি, রোগী ও তাঁদের পরিজনদের দুর্ভোগের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই দায়ী। এদিনই আবার আরজিকর হাসপাতালের সমস্যা সমাধানে মোহিত মঞ্চে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিধায়ক তাপস রায়, নির্মল মাঝি, অতীন ঘোষ, সুদীপ্ত রায় ও সাংসদ শান্তনু সেন। কিন্তু সেখানেও আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা জানিয়ে দেন হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে। আরজিকর হাসপাতালে কার্যত দুই সপ্তাহ ধরে টানা আন্দোলন চলছে। হবু ডাক্তাররাই সেই আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। গত ৩ অক্টোবর থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ আবার অনশন আন্দোলন শুরু করেছে। সেই সঙ্গে ৬ অক্টোবর থেকে চলছে কর্মবিরতি। আর এর রেশ সরাসরি পড়ছে হাসপাতালের চিকিত্‍সা পরিষেবায়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা রোগীদের নিয়ে কার্যত খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে রোগীর পরিজনদের। হাসপাতালে যারা ভর্তি আছেন তাঁদের আবার অন্য হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে সমস্যার সব থেকে বেশি সন্মুখীন হচ্ছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরাই। এই অবস্থায় হাসপাতালের পড়ুয়ারা এদিন গোটা বিষয়টির সুষ্ঠু মিমাংসার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করল।